আশাশুনিতে মরা গরুর মাংস বিক্রয়কালে গণধোলাই

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :

আশাশুনি সদরে মরা গরুর মাংস শ্যামনগরের জনৈক মহসিনের কাছে বিক্রয়কালে ক্রেতা বিক্রেতাকে গণ ধোলাই দেয়া হয়েছে। শুক্রবার (৩ জুন) বিকালে সদর ইউনিয়নের কমলাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। চরম আপত্তিকর ও বেআইনী কর্মকান্ডের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েগেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রæত আইনের আওতায় আনতে জোর দাবী উঠতে শুরু করেছে।

কমলাপুর গ্রামের ঋষি শিবপদ মন্ডলের ছেলে অর্জুন দীর্ঘদিন যাবৎ মৃত গরু গ্রামে এনে গোপনে গোপনে ছিলে শ্যামনগর/কালিগঞ্জের মাংস বিক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করে আসছিল। শুক্রবার দুপুর ২ টার দিকে একই ভাবে পাশের নদীতে ফেলে যাওয়া মরা গরু ধরে বাড়ির পাশে বাগানের মধ্যে বসে ছেলাকোটা করছিল। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়দের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।

তারা গোপনে গোপনে পাহারায় ছিল। সন্ধ্যার কিছু পূর্বে অজ্ঞাত ক্রেতা (কেউ বলছে কালিগঞ্জের ঈশ্বরীপুর (শ্রীফলকাঠি) এর মহসিন আবার কেউ বলছে শ্যামনগরের মহসিন বা অন্য কেউ) অর্জুনের বাড়ির পাশে বাগানে এসে মাংস নিতে আসলে লোকজন তাকে আটন করে। আস্তে আস্তে অনেক লোক জড়ো হলে গণধোলাই দেওয়া হয়। শীতলপুর গ্রামের মনু সরদারের ছেলে প্রসাদ, রমেশ মন্ডলের ছেলে শ্যামল, কমলাপুর গ্রামের অসিত দাশের স্ত্রী রানিমাসহ অনেকে সেখানে উপস্থিত হলে গণধোলাই চলতে থাকে। এক পর্যায়ে ক্রেতার কাছ থেকে প্রসাদ বেশ কিছু টাকা হাতিয়ে নেয়। যার থেকে রানীমা ৫০০/, মদন ১০০০/, আরশাদ, প্রদীপ, মনি, মুরাদ, জহুরুলসহ অন্যরা ৫০০ টাকা করে ভাগ পায়।

ঋষি অর্জুন জানায়, অজ্ঞাত ব্যক্তিটির সাথে তার অনেক আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল। ইতিপূর্বে ৩/৪ মাস আগে ২১ শত টাকা দিয়ে সে একটি মরা গরুর মাংস নিয়েছিল। শুক্রবার সে তার মোবাইলে (নং ০১৯১৫৬৪৪০৫৭) যোগাযোগ করে মাংস নিতে আসে। মাংস নেওয়ার আগেই তাকে ধরে ফেলা হয়।

স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিরাজুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা ৬.২০ টার দিকে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তায় মরা গরুর মাংস দেখতে পান। ঋষি অর্জুন অপরিচিত একজনের কাছে বিক্রয়কালে ধরা পড়ে। ক্রেতা পলিসি করে কেটে পড়ে। তখন চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে মোবাইল কথা হলে তিনি স্থানীয় ভাবে আলোচনার পরামর্শ দেন। গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে পুলিশকে অবহিত করা হলে আজিজ দারোগা বলেন, ভিকটিমতো চলে গেছে, ঋষি ভবিষ্যতে এমন কাজ না করে সেজন্য মুচলেকা নিয়ে মাংস মাটিতে পুতে ফেলতে অনুমতি দিলে সেভাবেই নিস্পত্তি করা হয়। তবে এসআই রিয়াজ এদিন রাতে ঘটনা তদন্তে এলাকায় গমন করেন বলে জানাগেছে।

মরা গরুর মাংস এভাবে বিক্রয় করে মানুষকে ঠকানো ও হারাম খাওয়ানোর ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে সমালোচনার ঝড় বইতে শুরু করেছে। অবিলম্বে তদন্ত পূর্বক ক্রেতাকে শনাক্ত করে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে আইনের আশ্রয়ে নেওয়ার জন্য এলাকার মানুষ জোর দাবি জানিয়েছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)