আইএইচটি’র শিক্ষক সাইদীকে নির্দোষ দাবী করে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
স্টাফ রিপোর্টার:
সাতক্ষীরার নলতায় ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি)’র ল্যাব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোলায়মান হোসেন ওরফে সালমানকে (২৫) তুলে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক সাইদী হাসান জড়িত নয় বলে উল্লেখ করে এবং তদন্ত পূর্বক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছেন আইএইচটি’র শিক্ষার্থীরা।
রবিবার বেলা ১১টায় নলতা ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র সামনে প্রায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন ওই প্রতিষ্ঠানটিতে পড়–য়া শিক্ষার্থীরা। সোলায়মান হোসেনকে নির্যাতনের ঘটনার সুষ্ঠ বিচার এবং শিক্ষক সাইদী হাসানকে নির্দোষ দাবী করে লেখা প্লাকার্ড হাতে মানববন্ধনে দাড়িয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের পরিবার পরিজন ছেড়ে আইএইচটিতে পড়তে আসে। সোলায়মানের মতো অন্য কোন শিক্ষার্থীর সাথে ভবিষ্যতে যাতে এধরনের নির্মম নির্যাতনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসনকে সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।
একইসাথে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনায় অভিভাবক সমতুল্য শিক্ষক সাইদী হাসানকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হচ্ছে দাবী করে শিক্ষার্থীরা বলেন, নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ এবং নির্যাতিত শিক্ষার্থী সোলায়মানের বয়ানে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে তার সহপাঠী নাহিদ হাসান এবং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আব্দুর রশিদ মিলে তাকে নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। তাছাড়া নির্যাতনকালীন সময়ে আইএইচটির শিক্ষক সাইদী হাসান ঘটনাস্থলে ছিলেননা। অথচ পুরো ঘটনার দায় পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক সাইদী হাসানের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। মানববন্ধন থেকে শিক্ষক সাইদী হাসানকে ফাঁসানোর নিন্দা ও প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া, মেহেদী হাসান, বিউটি খাতুন, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বিউটি পারভীনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এসময় ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে অধ্যায়নরত শতাধিক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে আইএইচটি’র তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সোলায়মান হোসেনকে তার রুম থেকে ডেকে ওই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ তলায় ৪০৭ নম্বর কক্ষে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রশিদ। এসময় তারা লোহার রড ও পাইপ দিয়ে পিটিয়ে সোলায়মানের মাথা ফাঁটিয়ে ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেতলিয়ে দেয় তারা।
এঘটনার পর শিক্ষক সাইদী হাসানের কোচিংয়ে না পড়ার কারনে নাহিদ ও রশিদ মিলে তাকে নির্যাতন চালিয়েছে বলে গনমাধ্যমে প্রচার দেয় নির্যাতনের শিকার সোলায়মান। কিন্তু কেবলমাত্র কোচিংয়ে না পড়ার কারনে এধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটার বিষয়ে সন্দেহ পোষন করছেন আইএইচটি’র অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। নির্যাতনের ঘটনার অন্তরালে শিক্ষার্থীদের মধ্যকার পূর্বের কোন বিরোধ বা অন্যকোন ঘটনা লুকিয়ে আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা।