২০২৩ সালের মধ্যে আ.লীগ সরকারের পতন: ফখরুল
অনলাইন ডেস্ক: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে একটি কঠিন সময় পার করছে। আমরা একটি ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছি। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে একবার গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিল, আবারো ক্ষমতায় এসে এক যুগ ধরে তারা দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একটি স্বৈরাচার রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটিয়ে আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা হবে।’এ জন্য তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার দুপুরে দিনাজপুর ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে জেলা বিএনপির কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার ঘোষণা দেন তিনি।
ফখরুল আবারো বলেন, ‘দেশ যাবে কোন পথে, ফয়সালা হবে রাজপথে।’
সারা দেশে ‘হত্যা, খুন, রাহাজানি’র কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নিজেই স্বীকার করে বলেছেন যে সমস্ত নেতারা হাজার হাজার টাকা লুট করে পাচার করেছেন- তাদের আওয়ামী লীগে জায়গা হবে না। এই বক্তব্যের মাধ্যমে ওবায়দুল কাদেররা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, আপনারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছেন।’
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা নির্যাতন করছেন, খুন করছেন, গুম করছেন। তার প্রমাণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যে বিচার, সেই বিচার রাজনৈতিক বিচার হয়েছে, তাকে যে কারাগারে দেওয়া হয়েছে- সেটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এরা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে ধ্বংস করেছে, সংবাদ মাধ্যমকে দলীয়করণ করেছে, সমস্ত দেশকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ এখন বিএনপির দিকে তাকিয়ে রয়েছে। তাই দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করেই দায়িত্বশীল দল হিসেবে বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলে এই জালিম সরকারের পতন ঘটাতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে। যেই বাংলাদেশে এই ধরনের নিপীড়ন থাকবে না, নির্যাতন থাকবে না, যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকবে, তার চর্চা থাকবে।’
দিনাজপুর জেল বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক এমপি রেজিনা ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু, আব্দুল খালেক, এজেডএম রেজওয়ানুল হক, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, আক্তারুজ্জামান মিয়া প্রমুখ।
এর আগে কাউন্সিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
দ্বিতীয় অধিবেশনে দিনাজপুর জেলা বিএনপির কাউন্সিল শুরু হয়।এই কাউন্সিলে জেলার ১ হাজার ৯১৯ জন কাউন্সিলের ভোটে নির্বাচিত হবেন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৭টি পদে ৯ জন নেতা। এতে পদপ্রত্যাশী ১৬ জন।