শ্যামনগর তরমুজ চাষে সফলতা আসলে ও পানি সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তা!

নিউজ ডেস্ক:

শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের খুটিকাটা বিলে প্রতিবারের ন্যায় এবারও তরমুজ চাষে সফলতার মুখ দেখছেন চাষীরা। তবে লবণাক্ত এলাকা হওয়ায় মিষ্টি পানির সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তা কাটছেনা কৃষকদের। মিঠাপানির অভাবে এবং চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হওয়ায় এই এলাকায় চাষাবাদে ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কৃষকদের। চলতি মৌসুমে মোট কৃষি জমির সামান্য কিছু অংশ চাষাবাদ হলেও মিঠাপানির অভাবে সিংহভাগই চাষযোগ্য জমি পতিত থাকে। এলাকার হাতেগোনা কয়েকটি পুকুর ও ডোবা থেকে মিঠা পানি নিয়ে সামান্য কিছু অংশে চলতি মৌসুমে ধান ও তরমুজ চাষ করে তাতে আশার আলো জ্বেলেছেন অত্র এলাকার কৃষকরা। কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর শ্যামনগর এর তথ্যমতে এবছর কাশিমাড়ী ইউনিয়নে তরমুজ চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টরের মতো। যেখানে গতবছর ছিল প্রায় এর দ্বিগুণেরও বেশি। লবণাক্ত এলাকা হওয়ায় শুধুমাত্র সেচ পানির অভাবে এ এলাকায় চলতি মৌসুমে কয়েক শত হেক্টর চাষযোগ্য জমি পতিত রয়েছে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, তরমুজে ভরে রয়েছে এ এলাকার চাষীদের ক্ষেত। একটু দেরিতে তরমুজ চাষ করাই বর্তমানে তরমুজ বাজারজাত করন শুরু করেছে চাষীরা। বিগটপ, জাম্বু গ্লোরি ও ড্রাগন জাতের তরমুজ চাষ করেছে কৃষকরা।

তরমুজ চাষী নীলকণ্ঠ মন্ডল, কামাল হোসেন, পলাশ মন্ডল ও মুজিবর রহমান জানান, গতবারের তুলনায় এবার তরমুজের ফলন অনেক বেশি। বৃষ্টির কারণে একটু দেরিতে জমি প্রস্তুত করায় তরমুজ চাষ এবছর একটু দেরিতে করা হয়েছে। এজন্য প্রথমদিকে আমরা ক্ষেত থেকে তরমুজ উঠাতে পারিনি। বর্তমানে তরমুজ উঠাতে শুরু করেছি। বাজারে এখন তরমুজের দাম বেশ ভাল। তবে আরও আগে উঠাতে পারলে দাম আরও বেশি পেতাম এবং লাভ ও বেশি হতো। তরমুজ চাষাবাদের কাজে শ্যামনগর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আমাদেরকে সার্বক্ষণিক তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছেন। বিঘাপ্রতি আমাদের খরচ হয়েছে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার মত। আর মৌসুমের শেষ পর্যন্ত বিক্রয় করে লাভ দাঁড়াবে বিঘাপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মতো। তবে আমাদের এখানে কৃষিকাজে সব চেয়ে বড় সমস্যা হল সেচ দেওয়ার জন্য মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করা। যদি মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করা যায় তবে আগামীতে এ এলাকায় পতিত শতশত বিঘা জমিতে নানামুখী কৃষি কাজ করা সম্ভব হবে। তাই আমরা সরকারসহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থার নিকট ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা করা কিংবা এ এলাকায় খাল ও পুকুর খননের মাধ্যমে মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করার জন্য আকুল আবেদন জানাচ্ছি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (গোবিন্দপুর ব্লক) শামসুর রহমান বলেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর শ্যামনগর সর্বদা তরমুজ চাষীদের সাথে আছে। এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল মিষ্টি পানির সমস্যা। যদি মিষ্টি পানির সরবরাহ করা যায় তবে তরমুজের আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে। তরমুজ চাষের প্রথমদিকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে চাষ নাবী (দেরি) হয়ে গেছে আবার বর্তমানে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ফলগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। এখানে প্রধান সমস্যা হল মিষ্টি পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)