দেশে ফিরে ‘নিঃস্ব’ স্বামী, স্ত্রীর নামে ঋণ ৬৮ লাখ টাকা
নিউজ ডেস্কঃ
প্রায় মাস চারেক আগে দেশে ফেরেন ৪৫ বছর বয়সী রবিউল আলম সোহেল। সাত বছরের প্রবাস জীবন কাটিয়ে একটু প্রশান্তির জন্য দেশে ফেরেন তিনি। কিন্তু বাড়ি ফিরেই জানতে পারেন অর্ধকোটিরও বেশি টাকার ঋণ রয়েছে তার স্ত্রীর নামে। প্রশান্তির জন্য ফ্রান্স ছেড়ে দেশে ফিরলেও স্ত্রীর ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন এ প্রবাসী।
সোহেলের বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সোনাইসার গ্রামে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেশে ফেরেন তিনি। স্ত্রীর হাতেই তুলে দিয়েছেন তার জীবনের সব আয়। অথচ স্বামীর অজান্তেই সাতটি এনজিও থেকে ৬৮ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছেন স্ত্রী।
ভুক্তভোগী সোহেল বলেন, এ ঋণ পরিশোধ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। রেমিটেন্স ঋণ দিলে অবশ্যই প্রবাসে অবস্থানরত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে হবে এনজিওগুলোর। তা না করে আমার স্ত্রীকে তারা কীভাবে ঋণ দিলো। সাত বছর পর দেশে এসে আমি নিঃস্ব। আমি জানি আমার স্ত্রী অপরাধী। কিন্তু এনজিওগুলো কীভাবে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আমার স্ত্রীকে ঋণ দিলো। এখানে অবশ্যই তাদের লাভ হয়েছে। আমার স্ত্রীর সঙ্গে সূক্ষ্ম প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ দিয়েছেন এনজিও কর্মীরা।
জানা গেছে, রবিউল আলমের স্ত্রী মারিয়া আফরিন মোট ৬৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত ৪৬ লাখ টাকা পরিশোধ করেছেন। এখনো বাকি রয়েছে ২২ লাখ টাকা।
মারিয়া আফরিনের স্বামী বলেন, আমি বাড়ি এসে একটি ফোন কলের সূত্র ধরে জানতে পারি আমার স্ত্রী আমার অজান্তে বিভিন্ন সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছেন। আমার প্রশ্ন হলো- আমার অবর্তমানে আমার স্ত্রীকে কীভাবে তারা এত টাকা ঋণ দিল। এখানে এনজিওর ফিল্ড ম্যানেজাররা অবৈধ সুযোগ নিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, সাত বছর ফ্রান্সে থেকে যে আয় করেছি তা দিয়ে একটি বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছি। এখনো কাজ শেষ হয়নি। এ মুহূর্তে বাড়ি এসে ঋণের কথা শুনে আমি দিশেহারা। আমার এক ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। স্ত্রীকে ঋণের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে এ ঘটনায় সে আত্মহত্যা করবে। আমি এখন কী করবো।
এনজিওগুলোর মধ্যে গাকের ফিল্ড অফিসার রিপন জানান, তিনি মারিয়া আফরিনের মোবাইল ফোনে তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেই ঋণ দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে ফোনের ওই পাশে কে ছিল তা তিনি নিশ্চিত নন।
একই কথা বলেন এসএসএস’র ফিল্ড অফিসার বিপ্লব ভদ্র। তিনি বলেন, এসএসএস থেকে মারিয়া এখন পর্যন্ত পাঁচবার ঋণ নিয়েছেন। প্রতিবারই ঋণ দেওয়ার সময় যতটুকু কাগজপত্র রাখা প্রয়োজন আমরা রেখেছি।
সিসিডিএ ভরাসার শাখার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার কাউছার আলম বলেন, মারিয়ার স্বামী ফোনে বলেছেন তার শ্বশুর সব জানেন। মারিয়াকে ঋণ দিলে কোনো সমস্যা নেই। আমরা নিয়ম মেনেই ঋণ দিয়েছি।