ভারসাম্য বজায় রাখতেই ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক :

জাতিসংঘে রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রস্তাবে বাংলাদেশ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ভারসাম্য বজায় রাখতেই বাংলাদেশ এবার ভোটদানে বিরত ছিল। রাশিয়াকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বরাখাস্ত করতে সাধারণ পরিষদে প্রস্তাবটি আনা হয়।

প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়া দেশগুলোর অন্যতম রাশিয়া, চীন, কিউবা, উত্তর কোরিয়া, ইরান, সিরিয়া, ভিয়েতনাম। ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, মেক্সিকো, মিসর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, জর্ডান, কাতার, কুয়েত, ইরাক, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং কম্বোডিয়া। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং রুশ বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ১৯৩ সদস্যের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিশেষ জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়েছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমারা ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এখন পর্যন্ত তিনটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তিনটি প্রস্তাবই পাশ হলেও এবার ভোটের ফলাফল একতরফা হয়নি। প্রথম প্রস্তাবে ইউক্রেনে রুশ হামলাকে আগ্রাসন হিসাবে উল্লেখ করে অবিলম্বে হামলা বন্ধে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।

বাংলাদেশ ওই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকলেও প্রস্তাবটি বিপুল ভোটে পাশ হয়েছিল। দ্বিতীয় প্রস্তাবটি ছিল ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার আহ্বান সংবলিত। দ্বিতীয় প্রস্তাবটিও বিপুল ভোটে পাশ হয়। বাংলাদেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয়।

রাশিয়াকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল থেকে বরখাস্ত করার লক্ষ্যে আনীত এই প্রস্তাব পাশ হলেও এবার প্রস্তাবের পক্ষে আগের মতো বিপুল সমর্থন পায়নি। অনেক বেশি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। আগের চেয়ে বেশি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। ফলে এবারের প্রস্তাবের ভোটে রাশিয়া হারলেও রাশিয়াকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, ‘বাংলাদেশের এখন শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থা। ফলে বাংলাদেশ যেভাবে উভয়পক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা করছে সেই ধারাবাহিকতার সঙ্গে এবারের ভোটদানে বিরত থাকা সঙ্গতিপূর্ণ।’

প্রথমবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটদানে বিরত থাকলেও বাংলাদেশের তরফে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে একটি বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশ যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান ব্যক্ত করেছিল। কিন্তু এবার কোনো বিবৃতি দেয়নি বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখতে গিয়ে বাংলাদেশের সতর্ক অবস্থান ব্যক্ত করেছে।

বাংলাদেশে রুশ অর্থায়নে ১৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, বছরে তিন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য এবং বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ রয়েছে। ফলে রাশিয়াকে উপেক্ষা করাও কঠিন। অপরদিকে বিশ্বের এক নম্বর শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের উপকণ্ঠে বুচায় অনেক মানুষ হত্যা, নির্যাতন, ধর্ষণ, অপহরণের শিকার হওয়ায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংস্থা থেকে বহিষ্কার করার পক্ষে প্রস্তাব পাশ হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)