বাপ্পি লাহিড়ীর মৃত্যু নিয়ে যেসব তথ্য দিলেন চিকিৎসক
বিনোদন ডেস্কঃ
কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বাপ্পি লাহিড়ী কয়েকদিন আগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। তার মৃত্যুতে সুরের দুনিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এখনো সেই শোক কাটেনি।
পিটিআই সূত্রের খবর, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় (ওএসএ) মারা যান বাপ্পি লাহিড়ী। মৃত্যুর আগে এক মাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এই গুণী শিল্পী। তার কিছু শারীরিক জটিলতা কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল।
ভারতীয় উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই সংগীতশিল্পীর মৃত্যুর পর চিকিৎসক দীপক নমযোশি জানান, বাপ্পি লাহিড়ীকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন তার অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক ছিল। তবে করোনা পরবর্তী জটিলতায় তার মৃত্যু হয়নি। অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। স্লিপ অ্যাপনিয়ার জন্য হঠাৎ করেই কোনো একটি অঙ্গের ওপর বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। ফলে শরীরে কার্বনডাই অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে গিয়ে রক্তের দানা পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে।
তিনি আরো জানান, লিভার ও কিডনির উল্লেখযোগ্য কোনো সমস্যা ছিল না বাপ্পি লাহিড়ীর। অতিরিক্ত ওজনের জন্য তার ফুসফুসে সমস্যা হয়েছিল। বাইপাস মেশিনে ব্যভারের জন্য তার গলার স্বরে পরিবর্তন এসেছিল। দীর্ঘদিন মেশিনের সহায়তা থাকার ফলে গলায় এক ধরনের শুষ্কতার সৃষ্টি হয়। এতে স্বরযন্ত্রের ক্ষতি হয়।
হাসপাতালে দিনগুলোর কথা স্মরণ করে চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে বাপ্পি আমাকে গান শোনাতেন। সুস্থ হয়ে উঠলে ‘মুম্বাই সে আয়া মেরে দোস্ত’ শোনাবেন বলেছিলেন। কিন্তু তার আগেই না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
১৯৭০ থেকে ৮০-এর দশকে হিন্দি ছায়াছবির জগতে অন্যতম জনপ্রিয় নাম বাপ্পি লাহিড়ী। দীর্ঘদিন বাংলা ও হিন্দি ছবির গান গেয়েছেন, সুর দিয়েছেন। প্রচুর সোনার গয়না পরতে ভালোবাসতেন। ছিল গায়কির নিজস্ব কায়দা, যা তাকে হিন্দি ছবির জগতে অনন্য পরিচিতি দিয়েছিল। হিন্দিতে ‘ডিস্কো ডান্সার’, ‘চলতে চলতে’, ‘শরাবি’, বাংলায় অমর সঙ্গী, আশা ও ভালোবাসা, আমার তুমি, অমর প্রেম প্রভৃতি ছবিতে সুর দিয়েছেন। গেয়েছেন একাধিক গান।
কিশোর কুমার ছিলেন বাপ্পির সম্পর্কে মামা। বাবা অপরেশ লাহিড়ী ও মা বাঁশরী লাহিড়ী দু’জনেই সংগীত জগতের মানুষ। ফলে একমাত্র সন্তান বাপ্পি ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। মা-বাবার কাছেই পান প্রথম গানের তালিম।
এছাড়া বিজেপিতে যোগ দিয়ে বাপ্পি লাহিড়ী রাজনীতিতেও নেমেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর কেন্দ্র থেকে ভোটেও লড়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতিতে কখনোই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেননি বাপ্পি।