মাস জুড়েই বইমেলা!
অনলাইন ডেস্ক :
করোনা মহামারির বন্দিজীবন কাটিয়ে বই উৎসবে মেতে ওঠার উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে বইমেলা। সামনের একটি মাস মানুষ বইয়ের আনন্দের মধ্যে থাকবে। বইমেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্তই হবে, ৬৫ এমন সিদ্ধান্তই ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বইমেলার উদ্বোধনী ভাষণে মেলার সময় এক মাস করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এটা ১৭ মার্চ পর্যন্ত করা যায় কি না, তা মেলা কতৃর্পক্ষকে আলোচনা করে ঠিক করার নির্দেশনাও দেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় প্রকাশকদের আনন্দের সীমা নেই। এ ঘোষণায় খুশি লেখক-পাঠকরাও।
বইমেলা যে শেষ পর্যন্ত মাঠে গড়াল সেই আনন্দই মেলায় আসা দর্শকদের মধ্যে। আমাদের সবার মধ্যেই। মেলা হবে কি হবে না—এ নিয়ে যে আশা-নিরাশার দোলাচল ছিল সেটা কেটে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দুয়ার খুলল অমর একুশে বইমেলার। আঁধার নামতেই আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠল স্বাধীনতা স্তম্ভ। ভাষাশহিদদের স্মরণে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভের উজ্জ্বল আলো ভিন্ন দ্যোতনা ছড়িয়ে দিল বইমেলা প্রাঙ্গণে, মানুষের মনে। বাঙালির জীবনে আবারও ফিরে এলো নতুন বইয়ের গন্ধ জড়ানো মাদকতাময় মাস। শুরু হলো বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২২’।
করোনা মহামারির সারা বছর ধরেই ঘরে বসে রয়েছে প্রকাশক ও বই প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট সবাই। তাই পুস্তক প্রকাশনা জগতের সবারই প্রত্যাশা ছিল যখন যেভাবেই হোক, বইমেলা যেন হয়। করোনা পরিস্হিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে আসায় বইমেলা করার সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি ভাচুর্য়ালি মেলার উদ্বোধন করেছেন সে কারণে সব স্টল খানিক অগোছালো রয়ে গেছে। আশা করি, এক দিনেই সব গুছিয়ে উঠবে।
যদিও মেলার বিন্যাস নিয়ে ক্ষোভ ঝরল আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণির কণ্ঠে। তিনি বললেন, করোনার পরে প্রথম এত বিশাল কোন সাংস্কৃতিক উৎসব হতে যাচ্ছে। কিন্তু সেটা গোছালো হলো না। মেলা প্রাঙ্গণ জুড়ে ধুলো, মাঠে ইটের টুকরাসহ নানা রকম নোংরা আবর্জনা জমে রয়েছে। স্টল বিন্যাসেও ছোট প্রকাশকদের অবহেলা করা হয়েছে।
মেলা প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে শুরু হবে। চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। রাত সাড়ে ৮টার পর কেউ আর প্রবেশ করতে পারবেন না। বইমেলায় স্বাস্হ্যবিধি মেনে প্রবেশ করতে হবে। মুখে মাস্ক না থাকলে কাউকে মেলায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। এছাড়া, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের দিক থেকে গত বছর থেকেই নতুন প্রবেশপথ করা হয়েছে। আর সেখানে গাড়ি ও মোটরসাইকেল রাখার পার্কিং করা হয়েছে। ফলে, মেলায় স্বচ্ছন্দেই সবাই আসতে পারবেন সবাই।
মেলায় শিক্ষামন্ত্রী: শুরুর দিনই বইমেলায় এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখার পাশাপাশি কেনেন পছন্দের নানা বইও। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই ও সৃজনশীল বিষয়ের সঙ্গে জড়িত থাকে, এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।