ভূমিকম্পে কাঁপল দেশ
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৪টা ১২ মিনিটের দিকে এ ভূকম্পন অনুভূত হয়।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্যমতে, মিয়ানমার-ভারত সীমান্তে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান। ১০-১২ সেকেন্ড স্থায়ী হয়েছিল এ ভূমিকম্প।
ইউরোপিয়ান সিসমোলজিক্যাল আর্থকোয়াক সেন্টারের (ইএসএমসি) তথ্যমতে, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ভারতের আইজল শহর থেকে ১৪০ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে এবং মিয়ানমারের ফালাম শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে। এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭০ কিলোমিটার গভীরে। উৎপত্তি ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে হলেও চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ঢাকাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বের এলাকাগুলোতে ভূমিকম্পের প্রভাব টের পাওয়া গেছে।
এর আগে, পরপর দুইটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এসব অঞ্চলের মানুষের মধ্যে। টানা এ ভূকম্পন বড় ভূমিকম্পের আভাস কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন- অবস্থানগত কারণে রিখটার স্কেলে সাত দশমিক পাঁচ থেকে আট দশমিক পাঁচ মাত্রার বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে আছে চট্টগ্রাম।
‘এই মাত্রায় ভূমিকম্প হলে নগরীর দেড় লাখ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। এক্ষেত্রে ভূমিকম্প সহনীয় নয় এমন ভবন চিহ্নিত করে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে এখনই প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।’
যে কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চট্টগ্রাম
চুয়েটের সাবেক ভিসি এবং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি)-এর উপাচার্য জাহাঙ্গীর আলম গণমাধ্যমকে বলেন, দেশে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হতে পারে বাংলাদেশ-মিয়ানমার, বাংলাদেশ-ভারত এবং মিয়ানমার-ভারত (পার্বত্য চট্টগ্রামের পূর্বে) সীমান্ত এলাকায়। এসব এলাকায় ৭ দশমিক ৫ থেকে ৮ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে। আর তা হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার। চট্টগ্রাম নগরীর দুই লাখ বিল্ডিংয়ের মধ্যে প্রায় দেড় লাখ ভবন ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরীর ৭০ শতাংশ ভবন ভূমিকম্প ঝুঁকিতে আছে বলে মনে করেন এ বিশেষজ্ঞ। তিনি বলেন, এরমধ্যে যে ভবনগুলো ঝুঁকিতে আছে, সেগুলোর শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। এ ধরনের কাজে বিভিন্ন দেশে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয়। আমাদের দেশেও এ ব্যবস্থা নেয়া দরকার।