বুধহাটায় অসুস্থ সিরাজুলের চরমজীর্ণ চালাঘরে মানবেতর জীবনযাপন
জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি:
আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা গ্রামে দিনআনা দিন খাওয়া অসহায় সিরাজুল অসুস্থ অবস্থায় চরম জীর্ণশীর্ণ চালাঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
বুধহাটা কওছারিয়া দাখিল মাদরাসার কাছে মেইন সড়কের পাশে মরহুম সোবহান সরদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪৫) পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত সামান্য জমির মালিক ছিলেন। ছোটবেলা থেকে বাই সাইকেল মেকানিক হিসাবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তিনি। তার পিতাও সাইকেল মেকানিক ছিলেন। তার অন্য ভাইরাও মেকানিকের কাজ করে থাকেন। প্রতিদিন কাজ করে যাকিছু আয় হয় তা দিয়ে কোন রকমে তাদের সংসার চলে আসছিল। সংসারে তার স্ত্রীসহ ৫টি কন্যা সন্তান আছে। ৩ কন্যাকে বিয়ে দিতে গিয়ে জমি বিক্রয়সহ সহায় সম্বল হারা হন তারা। ছোট ২ কন্যাকে নিয়ে আয়ের অর্থ দিয়ে তাদের সংসার চলছিল। একখন্ড জমি (মাত্র ১ শতক) থাকলেও সেখানে ঘর বাধার সক্ষমতা তার আর নেই। তাই রফিকুল ইসলামের পাকা ঘরের পিছনের দেওয়ালে একটি চাল দিয়ে ২০ ফুট লম্বা ও ৫/৬ ফুট চওড়া টিন দিয়ে ছাওয়া ও টিন-কাঠ দিয়ে ঘেরাবেড়া দেওয়া দু’টি কক্ষে তাদের বসবাস। টিন নষ্ট হয়ে ও বেড়ার কাঠ ভেঙ্গে যাওয়ায় খুবই নড়বড়ে হয়ে আছে। ঝড়বৃষ্টিতে পানিতে ভেসে যাওয়ায় ঘরে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। গরমের দিনেও চরম সমস্যা হয়ে থাকে। বৃষ্টির পানি চাল দিয়ে পড়ার সাথে সাথে খুবই নীচু ভিতের উপর বাইরের পানিতে তলিয়ে যায়। একচালা ছাবড়া ঘরটি গোয়াল ঘরের থেকেও দুরাবস্থা সম্পন্ন। তার মেয়ে-জামাতারা কালেভদ্রে বেড়াতে আসলেও রাত্রিতে থাকতে না পেরে বেলায় বেলায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
এমন কষ্টকর পরিস্থিতিতে কোন রকমে দিনের আয়ে আধাপেটা খেয়ে হলেও তাদের সংসার চলছিল। কিন্তু ৭/৮ মাস আগে তার কাধে টিউমার দেখা দেয়। চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ও সাতক্ষীরা শহরের অনেক চিকিৎসককে দেখান হয়েছে। ইতিমধ্যে দু’টি টিউমার পেকে গলে বেরিয়ে গেলেও আরও দু’টি টিউমার বেড়ে উঠেছে। এখন আর ঠিকভাবে মেকানিকের কাজ করতে পারছেনা। টিউমার দুরারোগ্য ব্যধিতে পরিণত হচ্ছে কিনা সে ভাবনায় কাতর পরিবারের সদস্যরা। এখন খাওয়া খরচ যুগিয়ে চিকিৎসা করানোর মত সামত্ব তাদের নেই। বাধ্য হয়ে সাহায্য পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। দু’টি ছোট মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সিরাজুল অসহায় হয়ে পড়েছেন। জন প্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, বিত্তবান ও সহৃদয় ব্যক্তিদের কাছে তার আকুল আকুতি, তার চিকিৎসার জন্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করতে এগিয়ে আসুন। সাথে সাথে একটু স্বস্তিতে বসবাস করার মত গৃহ পাওয়ার হকদার সিরাজুলের পরিবারের পাশে থাকুন। সরকারি ভাবে ভুমিহীনদের ভূমি ও গৃহ নির্মান এবং জমি আছে ঘর নাই -মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মানবিক প্রকল্পের আওতায় তাকে আনা যায় কিনা সে ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।