থার্টিফার্স্ট নাইটে ‘ভেজাল মদের’ আশঙ্কা, অসচেতনতায় জীবনঝুঁকি
নিউজ ডেস্ক:
বিদায় নিচ্ছে ২০২১ সাল। পেছনের গ্লানি মুছে ফেলে মঙ্গলকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে নতুন বছরের অপেক্ষায় সবাই। অপেক্ষায় আছেন প্রত্যাশিত সেই মুহূর্তটাকে আনন্দঘন করতে, উৎসবে গা ভাসিয়ে দিতে। ৩১ ডিসেম্বরের রাত অর্থাৎ ‘থার্টিফাস্ট নাইট’ এর অপেক্ষায়। তবে অসচেতনা-অনীহার কারণে এই উৎসবের রাতই বয়ে আনতে পারে দুর্ভাগ্য। কারণ এ সময়ে রয়েছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি, রয়েছে প্রাণহানির শঙ্কাও। তাই এখনই সাবধান হোন-
জানা গেছে, থার্টিফার্স্ট নাইট ঘিরে মদের চাহিদা বেড়েছে। এ উদযাপন উপলক্ষে অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীরা ভেজাল মদ তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করতে পারে।
এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ মদপান করে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে। এ কারণে ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে শঙ্কা জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। ভেজাল মদ ঠেকাতে এরইমধ্যে রাজধানীসহ কয়েকটি জেলাকে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
এ লক্ষ্যে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ভেজাল মদ যাতে বাজারে না আসতে পারে এ জন্য কাজ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এবং র্যাবসহ অন্যান্য বাহিনী।
ডিএনসি সূত্র জানিয়েছে, থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে অবৈধ মাদক ব্যবসায়ীরা ভেজাল মদ তৈরি করে ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করতে পারে। এ ধরনের অস্বাস্থ্যকর ও ঝুঁকিপূর্ণ মদ পান করে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারে।গত বছরের এ সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও কয়েকটি জেলায় ভেজাল মদ ছড়িয়ে পড়েছিল বলে জানিয়েছে ডিএনসির এক প্রতিবেদন। এলাকাগুলো হলো- ঢাকার রামপুরা, বনশ্রী, সিপাহীবাগ, মেরাদিয়া, উত্তরখান, দক্ষিণখান, পুরান ঢাকা, বিমানবন্দরের পাশের এলাকা, গাজীপুরের টঙ্গী, পূবাইল, শ্রীপুর, নারায়ণগঞ্জ বন্দর, পঞ্চবটি, টাঙ্গাইল ও মুন্সীগঞ্জ জেলার সুইপার কলোনি। এসব এলাকায় বাড়তি নজরদারি রাখতে বলেছে ডিএনসি।
গত বছরের মতো এবার যাতে প্রাণহানির এমন ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক আছি- জানালেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ লক্ষ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেছেন, ভেজাল মদের সরবারহ বন্ধ করতে অনলাইন ও অফলাইন দুই ভাবেই নজরদারি করছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তিনি বলেন, ভেজাল মদ বিভিন্ন জনের মাধ্যমে একাধিক হাত ঘুরে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছায়। চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় কিছু অসাধু চক্র এই ভেজাল মদ তৈরি করে বিক্রি করে। অলনাইন ও অফলাইনে যেন এই ভেজাল মদ ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে আমাদের নজরদারি রয়েছে।মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান রাসায়নিক কর্মকর্তা দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, আগে আমরা ভেজাল মদ বলতে যা পেতাম সেটি ছিল দেশীয় মদের সঙ্গে পানি বা ঘুমের ওষুধের মিশ্রণ অথবা ইথাইল অ্যালকোহলের সঙ্গে পানি বা রং মিশিয়ে বানানো। তবে এখন যা পাচ্ছি তা হলো মিথানল, যা পূর্ণাঙ্গ টক্সিক বা বিষ।
দুলাল কৃষ্ণ জানান, ইথালন হলো রেকটিফাইড স্পিরিট, তবে এটি মিথানলের মতো তেমন প্রাণঘাতী নয়। মিথানল ব্যবহার করা হয় ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাজে, এই মিথানল দিয়ে কাঠের আসবাবও রং করা হয়। এটা পুরোপুরি বিষ, আর মানুষ এটা খেয়েই মারা যাচ্ছে। তিনি আরো জানান, দেশে প্রাকৃতিক উপায়েই ইথানল তৈরি হচ্ছে, আর শিল্প-কারখানার জন্য আমদানি করা হচ্ছে মিথানল। ইথানল ও মিথানল দুটি রাসায়নিকই বাংলাদেশে সহজলভ্য।