রাশিয়ায় কয়লার খনি দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

রাশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চলে একটি কয়লার খনিতে শক্তিশালী বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৫২ জনে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন আরো অনেকে। ভূপৃষ্ঠের ৮২০ ফুট (২৫০ মিটার) গভীরে বৃহস্পতিবারের ওই বিস্ফোরণে নিহতদের মধ্যে খনি শ্রমিক ছাড়াও মারা গেছেন উদ্ধারকর্মীরাও।

সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, লিস্তভিয়াঝনায়া খনির ভেতরে প্রথমে মিথেন গ্যাসের বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ড হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খনিটি বিষাক্ত ধোঁয়ায় ভরে যায়। ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধারের পর বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে বাকি ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার ছাড়াই কাজ স্থগিত করেন কর্মীরা।

সাইবেরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের কেমেরোভো অঞ্চলের খনিটিতে মিথেন জমার পাশাপাশি আগুনের কারণে কার্বন মনো-অক্সাইড গ্যাস সৃষ্টি হয়েছিল। দুর্ঘটনার সময় খনিটিতে ২৮৫ জন অবস্থান করছিল।

প্রশাসনের বরাত দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা তাস ও আরআইএ-নভোস্তি জানিয়েছে, খনি থেকে এ পর্যন্ত মোট ২৩৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। খনিতে আটকা পড়া বাকিদের জীবিত থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।

৫২ জনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কার্বন মনো-অক্সাইড উল্লেখ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।

উদ্ধারকর্মীরা জানান, খনি থেকে ২৩৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করে ভূপৃষ্ঠে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। তাদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ৪৯ জন। ১১ জনের মরদেহও সে সময় উঠিয়ে আনা হয়। ভেন্টিলেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে বিষাক্ত গ্যাস পুরো খনিতে ছড়িয়ে পড়েছিল।

পরে খনির একটি দুর্গম অংশে আটকে পড়া শ্রমিকদের খোঁজ করতে গিয়ে প্রাণ যায় ছয়জন উদ্ধারকর্মীর।

এ ঘটনায় অঞ্চলটিতে তিন দিনের শোক জারি করা হয়েছে। প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। অসুস্থদের চিকিৎসায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সরকারকে।

খনিটিতে অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে এবং নিরাপত্তা বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছিল কি না তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন। খনির পরিচালক ও দুজন জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

লিস্তভিয়াঝনায়া খনিতে এটিই প্রথম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা নয়। ২০০৪ সালেও খনিটিতে মিথেন বিস্ফোরণে ১৩ খনিশ্রমিক নিহত হয়েছিল।

তবে রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী খনি দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৭ সালে। উলিয়ানোভস্কায়া খনিতে মিথেন বিস্ফোরণে প্রাণ হারায় ১১০ জন শ্রমিক। ওই খনিটিও কেমেরোভো অঞ্চলে অবস্থিত। এর আগে ২০১০ সালে একই অঞ্চলে অবস্থিত রাসপাদস্কায়া খনিতে মিথেনের কারণে জোড়া বিস্ফোরণ ও আগুনে প্রাণ গিয়েছিল ৯১ জনের।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)