কালিগঞ্জের ধলবাড়িয়ায় নৌকার প্রার্থীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এলাকাবাসীর মানব-বন্ধন
এস.কে ফিরোজ, নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ১০ নং ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব গাজী শওকত হোসেনকে রাজাকার পুত্র বলাই এবং তার পিতা সাবেক চেয়ারম্যান গাজী খোরশেদ আলমকে রাজাকার বলাই নৌকার প্রার্থী সজল মুখার্জীর বিরুদ্ধে মানব-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৭ নভেম্বর) বিকাল ৪ ঘটিকায় ধলবাড়িয়া ইউনিয়নে গোবিন্দপুর হাট খোলায় ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন-বাসীর আয়োজনে সহস্রাধিক সাধারণ জনগণের উপস্থিতিতে এ মানব-বন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত মানব-বন্ধনে বক্তারা বলেন, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে গত ২২ অক্টোবর ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী শওকত হোসেন নৌকার মনোনয়ন পান। কিন্তু ২৪ অক্টোবর ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একাংশ গাজী শওকত হোসেনকে রাজাকার পুত্র আখ্যা দিয়ে এক মানব-বন্ধন করেন। তাছাড়া সজল মুখার্জী আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ে ভিত্তিহীন মিথ্যা কাগজ পত্র দাখিল করে নিজেই নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।
মিথ্যা তথ্য দিয়ে গাজী শওকত হোসেনের পিতা সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম গাজী খোরশেদ আলমকে রাজাকার বলায় নৌকার প্রার্থী সজল মুখার্জীর বিরুদ্ধে এই মানব-বন্ধন করেন ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। ঘটনার প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে বক্তারা বলেন,ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন গাজী খোরশেদ আলমের চাচা এলেমুদ্দীন গাজী। আওয়ামীলীগের আদর্শে গাজী খোরশেদ আলম ৫ বার অর্থাৎ ২৫ বছর ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গাজী খোরশেদ আলমের মৃত্যুর পর তারই সুযোগ্য পুত্র গাজী শওকত হোসেন ২০০৩ সালে ও ২০১১ সালে আওয়ামী লীগের সমর্থনে উপজেলা বিএনপি’র সভাপতিকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে জন-নেত্রী শেখ হাসিনা গাজী শওকত হোসেনকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মনোনয়ন দেন এবং তিনি বিপুল ভোটে বিএনপির প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়লাভ করেন।আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি সৎ ও যোগ্য হওয়ায় উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২২ অক্টোবর গাজী শওকত হোসেনকে পুনরায় আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেয়া হয়।
কিন্তু ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সজল মুখার্জীর নেতৃত্বে তার সহযোগীরা অভিনব কায়দায় মিথ্যা,বানোয়াট মানব-বন্ধন করাসহ মনোনয়ন বোর্ডের কাছে গাজী শওকত হোসেনকে রাজাকার পুত্র উল্লেখ করে ভুল তথ্য দেন বলে উল্লেখ করেন বক্তারা। বক্তারা আরও বলেন যে,
সজল মুখার্জীর নেতৃত্বে যে রাজাকারের কথা উত্থাপিত হয়েছে তা ১৯৭১ সালে রাজাকারের তালিকায় ১৮ নং ক্রমিকের মৌতলা ইউনিয়নের, মৌতলা গ্রামের মৃত শেখ কেনাতুল্লা মিস্ত্রির পুত্র শেখ খোরশেদ আলম।
কিন্তু গাজী শওকত হোসেনের পিতার নাম খোরশেদ আলম,পিতা – মৃত জুম্মান গাজী। যাহা গাজী শওকত হোসেনের পিতার নামের সাথে মিলে কিন্তু প্রকৃত রাজাকারের পিতার নামের ও গ্রামের ঠিকানার অমিল রয়েছে। উক্ত তালিকার কাগজপত্র বিভিন্ন দপ্তরে দাখিল করে সজল মুখার্জি মিথ্যা ও অপপ্রচার মানব-বন্ধনের মাধ্যমে গাজী শওকত হোসেনের পরিবারকে হেয় করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বক্তারা। এসময় বক্তারা সজল মুখার্জিকে মিথ্যাবাদী, প্রতারক আখ্যা দিয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
উক্ত মানব-বন্ধনে সাধারণ জনগণ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল গফফার, কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নরেন চন্দ্র মন্ডল,ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চন্ডীচরণ মন্ডল,ধলবাড়িয়া ৬ নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি এস এম শওকত হোসেন প্রমুখসহ আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।