খালি পেটে জিরা পানি, মিলবে ১০ উপকার

চিকিৎসা ডেস্ক :

খাবারের স্বাদ বাড়াতে যেসব মশলা ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে জিরা অন্যতম। জিরা খাবারের স্বাদ-গন্ধ বাড়ায়। শুধু তাই নয়, জিরা স্বাস্থ্যেরও অনেক উপকার করে। বিভিন্ন ঘরোয়া প্রতিকারের ক্ষেত্রে জিরা ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

জিরা তামা, আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, জিঙ্ক এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। প্রতিদিন এক গ্লাস জিরার পানি পান করলে স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ উপকার হয়। চলুন জেনে নেয়া যাক জিরা পানি পানের আশ্চর্য উপকারিতাগুলো-

হার্টের ক্ষেত্রে উপকারী

জিরার পানি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও অত্যন্ত সহায়ক। নিয়মিত জিরার পানি পান, হার্টকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাধির হাত থেকেও রক্ষা করে।

ওজন কমাতে সহায়ক

জিরা ভালো হজমে সহায়তা করে এবং দেহ থেকে টক্সিন বার করতে পারে। পাচনতন্ত্র ঠিক থাকলে, শরীর থেকে টক্সিন সহজেই পরিষ্কার হয়, ফলে ওজন হ্রাস এবং ফ্যাট কমে। নিয়মিত জিরার পানি পান ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করে

জিরার পানিতে অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করতে অত্যন্ত কার্যকরী। তাছাড়া এটি মেটাস্ট্যাসিস প্রতিরোধ করতে পারে, যা শরীরের অন্যান্য অংশে ক্যান্সার ছড়ায়।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে

খালি পেটে জিরার পানি পান, ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। জিরা শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

জিরার পানিতে উচ্চ পটাশিয়াম থাকে। পটাশিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ, যা শরীরের সঠিক ক্রিয়াকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি লবণের নেতিবাচক প্রভাবগুলোর মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

বদহজম নিরাময় করে

অন্ত্রে গ্যাস জমে গিয়ে পেট ফুলে যাওয়ার ঘটনা খুবই সাধারণ ব্যাপার। পেট ফুলে শক্ত হয়ে যায় এবং পেট ভার হয়ে থাকার অনুভূতি হয়। পেটে অস্বস্তি কিংবা পেট ব্যথাও হতে পারে। এক্ষেত্রে জিরার পানি পান অত্যন্ত উপকারী হতে পারে। জিরা বদহজমের সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারে।

লিভারের জন্য উপকারী

জিরাতে লিভারের ডিটক্সিফিকেশন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জিরার পানি লিভারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। এটি ডাইজেস্টিভ এনজাইম উৎপাদন বাড়ায়। নিয়মিত জিরার পানি পান, শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেওয়ার পাশাপাশি, পিত্ত উৎপাদনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

জিরা পটাশিয়াম, আয়রন এবং ফাইবারের একটি চমৎকার উৎস। নিয়মিত জিরার পানি পান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তুলতে সহায়তা করে। এটি বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি, ঘনঘন অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাকেও কম করতে সহায়তা করে।

রক্ত স্বল্পতা নিরাময়ে সাহায্য করে

আয়রন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলোর মধ্যে একটি। এটি শরীরের সঠিক ক্রিয়াকলাপে মূল ভূমিকা পালন করে। রক্তে হিমোগ্লোবিন গঠনের জন্য আয়রনের প্রয়োজন, যা শরীরে অক্সিজেন পরিবহনের জন্য আরো বেশি প্রয়োজনীয়। আর এই আয়রনের একটি ভালো উৎস হলো জিরা। এটি রক্ত স্বল্পতা নিরাময়ে সাহায্য করে।

ত্বক ও চুলের ক্ষেত্রে উপকারী

জিরার পানিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি শরীরকে ডিটক্স করতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক স্বাস্থ্যকর এবং উজ্জ্বল থাকে। জিরার পানি ব্রণের সমস্যা দূর করে এবং ইনফেকশন থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এটি চুলের ক্ষেত্রেও অত্যন্ত উপকারী। এটি চুলের গোড়া শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি, চুল পড়া প্রতিরোধ করা, খুশকি দূর করা এবং অকালে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দূর করতেও অত্যন্ত সহায়ক।

জিরা পানি তৈরির নিয়ম

পানি ১ লিটার, জিরা গুঁড়া দুই চা চামচ। চুলায় একটি হাঁড়িতে পানি ফুটিয়ে জিরা গুঁড়া দিয়ে আরো ৮-১০ মিনিট ফুটিয়ে পানি পৌনে ১ লিটার হলে নামিয়ে ছেঁকে ঠাণ্ডা করতে হবে। এটি চাইলে কুসুম গরম বা বরফ শীতল দুভাবেই পান করা যায়। আরো সুস্বাদু করার জন্য এর সঙ্গে আখের গুড় আধা কাপ, তেঁতুলের মাড় ২–৩ টেবিল চামচ (ঘন), বিট লবণ ১ চা চামচ, লবণ ১ চা চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া, লেবুর রস ও ধনেপাতা বা পুদিনা পাতা কুচি যোগ করতে পারেন। লবণ, চিনি, টক নিজের স্বাদমতো কমবেশি করা যাবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)