আশাশুনি থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মানববন্ধন
আসাদুজ্জামানঃ
সাতক্ষীরার আশাশুনি থানার দুই উপ-সহকারি পুলিশ
পরিদর্শকের বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হয়রানি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ
এনে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর দুই টার দিকে
কাপষন্ডা ফুটবল মাঠের পাশে উক্ত মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন, খাজরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক
সম্পাদক রায়হানউদ্দিন খোকা, ছাত্রলীগ নেতা লাকী বিল্লাহ, আব্দুর রউফ
মোড়ল, সবুজ মোড়ল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, আশাশুনি থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক লিটন ও মিলন দীর্ঘদিন
ধরে কাপষন্ডা, চেউটিয়া, পারশেমারী ও বাইনতলা গ্রামে তুচ্ছ ঘটনায়
সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে হাতে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে আসার
সময় মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে আসছেন। এরই
ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জুলাই মাসে কাপষন্ডা গ্রামের স্কুল শিক্ষক
শেখর মন্ডল, দীলিপ বাছাড়, মহারাজ বাছাড়সহ কয়েকজন কালীমন্দিরের বারান্দায়
বসে সময় কাটানোর জন্য কলব্রীজ খেলছিলেন। এ সময় উপসহকারি
পরিদর্শক লিটন, মিলন ও একজন সিপাহী এসে তাদের হাতকড়া পরিয়ে
পেন্ডিং মামলায় চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৭৫ হাজার টাকা নেন। স¤প্রতি
চেউটিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফ ও বারি সানা কাপষন্ডা বাজারের একটি
চায়ের দোকানের বেঞ্চে লুডু খেলছিলেন। তাদেরকে বিচারাধীন মামলায়
গ্রেপ্তার দেখানোর ভয় দেখিয়ে থানায় আনার পথে মোটা অংকের টাকা
নিয়ে ছেড়ে দেয় উপসহকারি পরিদর্শক লিটন ও মিলন। বাইনতলার আলিম ও
আমিনুর রহমান বিড়ি খাওয়ার সময় তাদেরকে আটক করে হাতকড়া পরান ওই
দু’ পুলিশ কর্মকর্তা। মাদক মামলায় চালান দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ
থেকে আদায় করা হয় ২০ হাজার টাকা। গত ২৩ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে
কাপষন্ডা পূর্ব বিলে মন্টু সাহেবের ঘেরের রাস্তায় জুয়া খেলার সময় ওই দু’
পুলিশ কর্মকর্তা মোরশেদ নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে। খাজরা ইউনিয়ন
ছাত্রলীগের সভাপতি লাকী বিল্লাহ জানতে চাইলে পুলিশ তাকেও হাতকড়া
পরিয়ে থানায় নিয়ে আসতে চাইলে ইউপি সদস্য বাকী বিল্লাহ ও ইউনিয়ন
আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক রায়হানউদ্দিন খোকা প্রতিবাদ করলে
খোকাকে চড় থাপ্পড় মেরে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেয় পুলিশ। ছাত্রলীগ নেতা
লাকী বিল্লাহকে থানা থেকে ছেড়ে দেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তবে
মোর্শেদকে মামলা দিয়ে চালান দেওয়া হয়। এ ছাড়াও ওই দুই উপসহকারি
পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ঠুনকো অভিযোগে আটক করে হাতকড়া পরিয়ে
থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ
করা হয়। ওই দু’ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ২৪ অক্টোবর সাতক্ষীরা জেলা
প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানান বক্তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আশাশুনি থানার উপ-সহকারি পুলিশ পরিদর্শক
লিটন ও মিলন সাংবাদিকদের বলেন, রায়হানউদ্দিন খোকার বিরুদ্ধে এলাকায়
বনদস্যুতা, অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা ও
খুলনা জেলার একাধিক থানায় ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও অপহরণসহ বিভিন্ন
মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে এমন খবর জানতে
পেরে প্রতিশোধ নিতে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মানববন্ধন
করেছে।