মাঠ ঘোলা করতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয়েছেঃসাতক্ষীরায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু

আসাদুজ্জামানঃ

বিএনপির দেওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও শেখ হাসিনার পদত্যাগের প্রস্তাব মাঠে আসার পরই এবার সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছে
মন্তব্য করে সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি বলেন, এক্ষেত্রে প্রশাসনের
ব্যর্থতা ছিল। এজন্য উদ্দেশ্যমূলক নিষ্ক্রিয় কর্মচারীদের খুজে বের করে ও জড়িতদের
উপযুক্ত শাস্তি দেওয়াটাই এখন বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার প্রধান
চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও বলেন, দেশের ৩২ হাজার মন্ডপে শান্তিপূর্নভাবে পূজা হলেও
৫০টি এলাকায় হামলার ঘটনা প্রশাসন ঠেকাতে পারেনি। তবে হামলাকারীদের
অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রশাসন বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক
সম্প্রীতি রক্ষার চেষ্টা করলেও বারবার এই ঘটনা ঘটছে। কখনও হিন্দু মন্দিরে কখনও
বৌদ্ধ মঠে, কখনও মসজিদের ঈমাম বা পীরের মাজারে এমন সব ঘটনা দুঃখজনক
উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির কাছে এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো আগামীতে আর
কোন সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গি হামলা হবে না, সেই গ্যারান্টি। প্রশাসনের মধ্যে
ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়দের খুজে বের করতে হবে। হাসানুল হক ইনু বুধবার
স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং জাসদের ৪৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত জেলা
শিল্পকলা একাডেমিতে বিভিন্ন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এর
আগে তিনি সাতক্ষীরার সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের
জবাব দেন। এসময় তার সাথে জাসদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা
উপস্থিত ছিলেন। শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠান শেষে
সন্ধ্যায় তিনি শহরে এক মশাল মিছিলে নেতৃত্ব দেন।
প্রধান অতিথি হাসানুল হক ইনু আরও বলেন, সকল সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গিদের
নিরাপদ আশ্রয় বিএনপি। তত্ত¡াবধায়ক সরকার এবং শেখ হাসিনার সাংবিধানিক
সরকারের পদত্যাগের প্রস্তাব মাঠে আসার পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা শুরু হয়েছে।
দূর্গাপূজাকে উছিলা হিসাবে গ্রহন করে অসাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার
জন্য মাঠ ঘোলা করার লক্ষেই এই সাম্প্রদায়িক হামলা এখন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন
তিনি। এই প্রস্তাব যতদিন মাঠে থাকবে ততদিন এই দেশে সাম্প্রদায়িক অপঘাত
চলতেই থাকবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের
জবাবে তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষায় এই আইনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে
নিরীহ মানুষ এবং মিডিয়াকর্মী যাতে এর হয়রানির শিকার না হন সেজন্য
আইনটি পর্যালোচনা করে সংশোধন করা দরকার।
প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ১৪ দল এখনও মাঠে আছে। করোনার কারনে
কার্যক্রম দুর্বল হয়ে পড়ায় নতুন করে তা বেগবান হবে। এই ১৪ দলই একমাত্র জোট
যারা সকল সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দিতে পারে। প্রসঙ্গ উল্লেখ করে হাসানুল হক
ইনু আরও বলেন, ক্ষমতাবাদীর নামে দলের মধ্যে গুন্ডাবাজি চলছে এবং দূর্নীতিবাজদের
সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। এরা ভিতরের লোক আর বাইরের শক্তি হচ্ছে জঙ্গিবাদ। এই ই শক্তিকে প্রতিহত করার আহবান জানান তিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, জিয়া ও এরশাদ
সংবিধান বহুভাবে কাটাছেড়া করেছেন। আমরা ১৫ দফা সংশোধনের মাধ্যমে
কিছু সাম্প্রদায়িক ও সামরিক সিদ্ধান্ত বাদ দিতে পেরেছি। এখন সংবিধান
পর্যালোচনার সময় এসেছে। অসাম্প্রদায়িক প্রশাসন এবং অসাম্প্রদায়িক
রাজনৈতিক অঙ্গন ও অসাম্প্রদায়িক সংবিধান দরকার।
জেলা জাসদ সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও
বক্তব্য রাখেন জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি এ্যাড. রবিউল আলম, বীর
মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ শফিউদ্দিন মোল্লা, কেন্দ্রীয়
নেতা আব্দুল্লাহিল কাইয়ুম, ওবায়দুর রহমান চুন্নু, কৃষক জোট সম্পাদক অধ্যক্ষ
আশেক ই এলাহী, জাকির হোসেন লস্কর প্রমুখ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)