লঙ্কা বধে আজ মাঠে নামছে টাইগাররা
স্পোর্টস ডেস্ক:
হার দিয়েই টি-২০ বিশ্বকাপের মিশন শুরু। এরপর সুখ-দুঃখের নানা দোলাচলে সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নেয় আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা। বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব শেষ করে এবার মূল পর্বে বাংলাদেশ। তাই সামনে পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ, এটা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
শারজায় আজ বিকেল ৪টায় সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা। প্রথম রাউন্ড থেকে আসা এ দলটি আইসিসির আসরে সব সময় নিজেদের তুলে ধরে বেশ ভালোভাবেই। তাই লঙ্কা বধের মিশনে টাইগারদের ঘাম ঝরাতেই হবে।
এদিকে টুর্নামেন্টের মাঝপথে আইসিসির সিদ্ধান্ত বদলের কারণে বদলে গেছে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ। সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম প্রতিপক্ষের নাম যখন জানলেন মাহমুদউল্লাহরা, তখন ম্যাচ শুরু হতে বাকি ৪৮ ঘণ্টারও কম।
আইসিসির ‘খামখেয়ালিপনায়’ জলাঞ্জলি দিতে হচ্ছে এতদিনের হোমওয়ার্ক। ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াইয়ের ছক এখন অর্থহীন। শ্রীলংকাকে দিয়ে শুরু অভিযানে বাংলাদেশ কত দ্রুত মানিয়ে নিতে পারবে, সেটাই দেখার।
ওমান থেকে আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আসার পর অনুশীলনের সুযোগ পাওয়া গেছে মাত্র একদিন। তবে এরআগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশনে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো শ্রীলংকাকে ভালোভাবেই চেনেন। সেই চেনা থেকেই তাদের হারানোর ছক কষেছেন কোচ। তিনি বলেন, কয়েকমাস আগে আমরা শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলেছি। টেস্ট ও ওয়ানডেতে তাদের বিপক্ষে ভালো লড়াই করেছি। আমাদের স্কিলফুল বোলার ও কিছু ভালো ব্যাটসম্যান নিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল। বিশ্বমানের অলরাউন্ডার সাকিব আছে। কন্ডিশনও আমাদের পক্ষে। শারজার উইকেট অনেকটা ঢাকার মতো। আশা করি, আগামীকালের (আজ) ম্যাচে এগুলো আমাদের সহায়তা করবে।
ক্রিকেটের এ সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে দুর্বলতার কারণে টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের খুব একটা সুখ স্মৃতি নেই। ২০০৭ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরে সুপার এইটে খেলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০০৯, ২০১০ ও ২০১২ সালের আসরে একটি জয়ও পায়নি টাইগাররা।
২০১৪ আসরটি ১৬ দলের হওয়ায় জয় পায় বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে ৩ খেলায় ২টি জয়ে হয়েছিল গ্রুপ সেরা। এরপর সুপার টেনে ৪ ম্যাচের সবগুলোই হারে টাইগাররা।
একই ধরনের চিত্র ছিলো ২০১৬ সালেও। প্রথম রাউন্ডে ৩ খেলায় ২ জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিলো। গ্রুপ সেরা হয়ে সুপার টেন-এ উঠলেও, সেখানে কোন জয়ের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। সবগুলো ম্যাচই হারে টাইগাররা। সুপার টেন পর্বে ভারতের কাছে ১ রানে হার বাংলাদেশের জন্য ছিলো কষ্টদায়ক। শেষ তিন বলে তিন উইকেট হারায় তারা। যখন জয়ের জন্য দরকার ছিল তিন বলে মাত্র ২ রানের।
এ ফরম্যাটে শ্রীলংকার বিপক্ষে ১১ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে চারটিতে জিতেছে টাইগাররা। সাতটিতে জিতে শ্রীলংকা। সর্বশেষ দুই ম্যাচে জয় ছিল বাংলাদেশেরই।
তবে সব কিছু পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো আসরের ফাইনালে খেলার লক্ষ্যে জয় দিয়ে শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য তরুণদের কাছ থেকে ভালো পারফরমেন্স আশা করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাইফুদ্দিন, মাহেদি হাসান ও নাইম শেখের জ্বলে উঠার আশায় অধিনায়ক।
মাহমুদউল্লাহ বলেন, তাদের পারফরম্যান্স আমাদের জন্য ইতিবাচক। সাইফুদ্দিন তিন ম্যাচেই ভালো বোলিং করেছেন, ভালো ব্যাটিং করেছেন। মাহেদি ভালো বল করেছেন। নিজের প্রথম ম্যাচে ৬৪ রান করেন নাইম।
মাহমুদউল্লাহ আরো বলেন, আমি আশা করি তারা এ ধারা অব্যাহত রাখবে। তারা যখন পারফর্ম করে তখন খুবই ভালো লাগে এবং এটা আমাদেরও অনুপ্রাণিত করে। আমি আশা করি, সুপার টুয়েলভেও তারা আরো ভালো করবে।
টি-২০ ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফরমেন্স আশানুরূপ নয়। এখন পর্যন্ত ১১৬ ম্যাচে ৪৩টি জিতেছে তারা। ৭১ ম্যাচে হার ও দুটি পরিত্যক্ত হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ক্রিকেটের এ সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বিশ্বকাপে ২৮টি ম্যাচ খেলেছে এবং মাত্র সাতটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে বাছাই পর্ব থেকেই ছয়টি জয় এসেছে, সর্বশেষ জয়টি পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে। টুর্নামেন্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে তারা।
বাংলাদেশ দল: মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, আফিফ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, রুবেল হোসেন, শরিফুল ইসলাম, শেখ মাহেদি হাসান, নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদ।