বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি

পাইকগাছা  প্রতিনিধি: নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে একটানা ৩ দিনের বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে আমন ক্ষেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। একটানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় আধাপাঁকা ধান মাটিতে পড়ে পানিতে ডুবে থাকায় বীজ উৎপাদনে লক্ষ্য মাত্রা উৎপাদন না হওয়ার আশংখা করছে খামার কতৃপক্ষ।

ঝড়ো হাওয়ায় আধা কাঁচা পাঁকা ধান মাটিতে নুয়ে পড়ে পানিতে ডুবে ও ধানের কুশি ভরা ফুল ঝরে পড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মাটিতে নুয়ে পড়া পানিতে ডুবে থাকা ধান পরিপূর্ণ পুষ্ঠ না হওয়া ও ধানের কালো কালো দাগ পড়ার সম্ভাবনা খুব বেশি রয়েছে। তাছাড়া কুশি ভরা ধানের ফুল ঝড়ো বাতাসে পড়ে যাওয়ায় পরাগায়ন না হলে চিটা হয়ে যেতে পারে।

খামারে আমন ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছিল। গত শনিবার দুপুর থেকে ঝড়ো হাওয়ায় খামারের আঁধা পাঁকা ৩৭ একর জমির ধান ক্ষেত লন্ড ভন্ড হয়ে গেছে। দেখলে মনে হয় ঝড়ো হাওয়া পাঁকা ধান ক্ষেতে মই দিয়ে গেছে। উপকূলে অবস্থিত এ খামারটিকে লবন পানিসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে ফসল ফলাতে হয়।

খামার সূত্রে জানাগেছে, চলতি আমন মৌসুমে খামারে বিনা ২৩ জাতের ২৫ একর ও ব্রি-ধান ৩৭ জাতের ১২ একর সর্বমোট ৩৭ একর জমির ধান পানিতে পড়ে ব্যপক ক্ষতির মুখে রয়েছে। তাছাড়া ব্রি ধান ৩০ জাতের ১৪ একরে সবে মাত্র থোড় এসেছে ও ব্রি ধান ৭৮ জাতের ৭ একরে কুশি বের হচ্ছে। এবস্থায় ঝড়ো হাওয়ায় ধানের পরাগায়ন না হলে ধান চিটা হয়ে যেতে পারে। খামারে সর্বমোট ৫৮ একর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ৪টি জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। তাছাড়া ক্ষেতের বিভিন্ন স্থানে ধানের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ হারুন জানান, নি¤œচাপের প্রভাবে একটানা বৃষ্টি ও মাঝে মাঝে ঝড়ো হাওয়ায় চলতি মৌসুমে আমন ক্ষেতের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। বিনা ২৩ জাতের ২৫ একর ও ব্রিধান ৭৩ জাতের ১২ একর জমির ধান ঝড়ে পড়ে পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

২৪ ঘন্টার মধ্যে পানি সরে না গেলে ডুবে যাওয়া ধান থেকে অঙ্কুর বের হতে পারে এবং ধান কালো হয়ে যাওয়ার সম্ভবনাও রয়েছে। ব্রিধান ৩০ জাতের ১৪ একর ও ব্রিধান ৭৮ জাতের ৭ একর জমিতে আবাদ করা হয়েছে। এ জাতের ধানে সবে মাত্র ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় ঝড়ো হাওয়ায় ফুল ঝরে যাওয়ায় পরাগায়ন না হলে ধান চিটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে। তাছাড়া পুষ্ট না হলে ধান চিটা হবে।

এতে আশানারুপ বীজ উৎপাদন হবে না বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। তাছাড়া মাটিতে পড়ে ডুবে থাকা ধান কর্তন করার জন্য শ্রমিক দিয়ে কাচির সাহায্যে কাটতে হবে। এতে শ্রমিক খরচের পরিমাণ অনেক গুণ বেড়ে যাবে। তবে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে ধান বাঁচানোর জন্য। ধানের কি পরিমান ক্ষতি হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয়। ধান কাটা পর ও ঝাড়াই করে ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা যাবে। বীজ উৎপাদনে লক্ষমাত্রা পুরণ হবে কি না তা নির্ভর করছে উৎপাদিত ধান কেমন হবে এবং ধান কেটে ঝাড়াই করে পরীক্ষা করার পর জানা যাবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)