কৃমির সমস্যা বোঝার উপায় ও ঘরোয়া সমাধান
চিকিৎসা ডেস্ক:
খাবারদাবার ঠিক থাকার পরও মাঝেমধ্যেই পেট কামড়ে ব্যথা হয়? এই কারণে বাইরের খাবার ও তেল-মশলাযুক্ত খাবার খাওয়াও বাদ দিচ্ছেন? চেষ্টা করছেন বাড়িতে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে? তারপরও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না? অনেক সময় দেখা যায়, হজমের সমস্যা হলে পেটে ব্যথা হয়। যা খুব স্বাভাবিক।
তবে এই সমস্যা যদি কয়েকদিন পরপরই দেখা দেয় তাহলে সতর্ক হোন। এর কারণ হতে পারে আপনি কৃমির সমস্যায় ভুগছেন। চলুন এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক-
কৃমির সমস্যা বুঝবেন যেভাবে
কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় খোঁজার আগে নিশ্চিত হওয়া জরুরি যে সমস্যাটি আসলেই কৃমির কারণ হচ্ছে কি না। কারণ পেটে ব্যথার পেছনে আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। আপনি আসলেই কৃমির কারণে সমস্যায় ভুগছেন কি না তা বোঝার জন্য এই লক্ষণগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন-
* দুর্বলতা
* তলপেটে ব্যথা
* ক্ষুধা না পাওয়া
* সব সময় ক্লান্ত লাগা
* সব সময় কাশি হওয়া
* ডায়েরিয়া এবং বমি হওয়া
* হঠাৎ করে ওজন কমে যাওয়া
* সব সময়ে গ্যাস অথবা পেট ফেঁপে থাকা।
কৃমি দূর করার ঘরোয়া সমাধান
পেটে ব্যথা হওয়ার অন্যতম কারণ হলো পেটে কৃমি থাকা। অনেকে ওষুধ খেয়ে কৃমি দূর করেন। তবে ওষুধ ছাড়াও ঘরোয়া উপায় মেনে দূর করা যায় এই সমস্যা। তাতে কৃমির পাশাপাশি দূর হবে পেটে ব্যথাও। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কৃমি হলে কী করবেন-
মধু ও কাঁচা পেঁপে
মধু কিংবা কাঁচা পেঁপের উপকারিতার কথা সবারই জানা। এই দুই খাবার একসঙ্গে খেলে তা কৃমি দূর করবে দ্রুতই। সেজন্য এক গ্লাস হালকা গরম দুধের সঙ্গে এক চা চামচ মধু ও এক চা চামচ কাঁচা পেঁপে কুড়ানো মিশিয়ে সকালবেলা খালিপেটে খেতে হবে। এভাবে সপ্তাহখানেক খেলেই উপকার মিলতে শুরু করবে।
লবঙ্গ
আমাদের পেটে ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে অন্ত্রে থাকা কৃমি ও প্যারাসাইট। ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান করতে চাইলে এক কাপ পানিতে তিন-চারটি লবঙ্গ ফুটিয়ে সেই পানীয় সারাদিন অল্প অল্প করে পান করতে থাকুন। লবঙ্গ কৃমি নষ্ট করার পাশাপাশি কৃমির ডিমও নষ্ট করে। এর ফলে পেটে ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।
কাঁচা হলুদ
কাঁচা হলুদ পেট থেকে কৃমি তাড়াতে বেশ কার্যকরী। প্রতিদিন সকালে উঠে এক টুকরো কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেতে পারেন। দাঁত হলদে হয়ে যাওয়ার ভয় করছেন? দাঁত ভালোভাবে মেজে নিলেই আর সমস্যা হবে না। কাঁচা হলুদ জীবানু নাশক ও প্রদাহ নিবারক। এটি হজমশক্তি ভালো করতেও কাজ করবে।
নিমপাতা
রোগ-জীবাণু দূর করতে নিমপাতা কার্যকরী। এটি কৃমি দূর করতেও সমান কার্যকরী। বেশি করে নিমপাতা বেটে এয়ার টাইট বক্সে করে ফ্রিজে রেখে দিন। এরপর প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে আধা চা চামচ নিমপাতা বাটা মিশিয়ে খালি পেটে পান করুন। খেতে একদমই ভালোলাগবে না, কিন্তু কৃমির কষ্ট থেকে নিস্তার পেতে চাইলে নিয়মিত পান করুন। তবেই কৃমির সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি পাবেন।
কুমড়ার বীজ
নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দূর করার জন্য কাজে লাগে কুমড়ার বীজ। এটি আপনাকে কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতেও সাহায্য করবে। কুমড়ার বীজে রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেগুলো কৃমি ও প্যারাসাইট মেরে ফেলতে কার্যকরী। সেজন্য প্রথমে সম পরিমাণ নারকেলের দুধ ও পানি মিশিয়ে তাতে এক চা চামচ ভেজে গুঁড়া করে নেয়া কুমড়ার বীজ মিশিয়ে নিন। পানীয়টি সকালে উঠে খালি পেটে পান করুন। এভাবে সপ্তাহখানেক ধরে খেলে কৃমি দূর হবেই।
সূত্র: পপক্সো।