সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেক জালিয়াতির ঘটনায় প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূবর্ক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেক জালিয়াতির ঘটনায় প্রকৃত জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূবর্ক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে রক্ষা পেতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে উক্ত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সদর উপজেলার বুলারাটি গ্রামের শেখ সৈয়েদুল ইসলামের ছেলে ভুক্তভোগী শেখ আমিনুর রশিদ সুজন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি বিগত ২০১০ সালে থেকে সাতক্ষীরা জেলা শহরে জাতীয় দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার বিজ্ঞাপন প্রতিনিধি এবং ইংরেজি দ্যা ডেইলি সান এর প্রতিনিধি হিসাবে সুনামের সাথে ১১ বছর দায়িত্ব পালন করে আসছি। এই দীর্ঘ সময়ে আজ পর্যন্ত কোন দপ্তর আমার বিরুদ্ধে কোন ধরনের কোন অভিযোগ নেই। তিনি বলেন, গত ২৪ আগষ্ট আমি সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে কাজ শেষে ফিরে আসার পথে ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান ও হিসাব রক্ষক আবু হুরাইরাসহ দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে সেখানে অবস্থান করতে দেখি। ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তা এ সময় ডিবি পুলিশকে ভুল বুঝিয়ে একটি পিছন সাইডের স্থির ছবির সূত্র ধরে আমাকে পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করান। কিন্তু ওই চেকের স্বাক্ষর, মোবাইল নাম্বারের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা না পেয়ে জেলা পরিষদের ওই দুই কর্মকর্তা আমার বাড়িতেও পুলিশ পাঠান। তল্লাশী করে পুলিশ কোন কিছু না পেয়ে ১০ বছর পুরাতন একটি ডায়েরি এবং কালের কণ্ঠ ও ডেইলি সান জেলার বিভিন্ন বিজ্ঞাপন প্রতিষ্ঠানের এন্টি রেজিস্ট্রার নিয়ে আসেন হাতের লেখা যাচাইয়ের জন্য। এতোকিছুর পরও তারা এর সাথে আমার কোন সম্পৃক্ত পাননি। ওই দুই ব্যাংক কর্মকর্তা নিজেদের বাঁচতে বিভিন্ন কৌশলে আমাকে ফাঁসিয়ে প্রতারনার মামলায় জড়িয়ে দেন। যা আমি বুঝে উঠতে পারেনি। পরবর্তীতে আমি জানতে পারি যে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে গত বছরের ২৩ আগষ্ট ছয় লাখ টাকার চেক জালিয়াতির ঘটনায় গত বছরের ২৯ আগষ্ট কারো নাম উল্লেখ না করে সদর থানায় ৭২ নং (জিআর ৬৩৩/২০ নং) যে মামলা করেছিলেন সেই মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জহিরুল ইসলাম আমাকে আদালতের মাধ্যমে দু’ দিনের রিমান্ডে নেন। রিমান্ড চলাকালে পুলিশ আমার বিভিন্ন ধরণের স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্র গ্রহণ করে। এরপর ২১ সেপ্টেম্বর আমি আদালত থেকে জামিন পেলেও পুলিশের কাছে থাকা আমার জাতীয় পরিচয়পত্র, অফিস আইডি, ক্যামেরা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ম্যানিব্যাগ, বিজ্ঞাপনের রিসিভসহ অফিসিয়াল কাগজপত্র এখনও ফেরত পায়নি। এ গুলো ফেরত পাওয়ার জন্য আমি দাবী জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, স্বাক্ষর যাচাই না করে বাংলাদেশ ব্যাংক এর নীতিমালা বর্হিভতভাবে একাউন্ড পে ছাড়া ব্যাংক থেকে কিভাবে ৬ লক্ষ টাকা ক্যাশ উত্তোলন হল ? যেখানে জেলা পরিষদের ৫ হাজার টাকার উর্দ্ধে কোন একাউন্ট পে চেক চেয়ারম্যান, প্রধান নির্বাহী ও ক্যাশিয়ারের স্বাক্ষরিত এডভাইস ছাড়া দেওয়া হয় না সেখানে ছয় লাখ টাকা কিভাবে ক্যাশ দিলো ব্যাংক? চেকজালিয়াতির এই ঘটনায় জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা খলিলুর রহমান ও ক্যাশিয়ার আবু হুরাইয়রাসহ ব্যাংকের কাশিয়ার জড়িত থাকতে পারে বলে আমি মনে করি। তনি আরো বলেন, আমার তিন বছরের ছেলে বর্তমানে থ্যালাসামিয়া ও নিউরো সংক্রান্ত কঠিণ রোগে আক্রান্ত। আমি নিজের সংসার চালানোর পাশপাশি ছেলের ঔষধ কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। এমতাবস্থায় জেলা পরিষদ ও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিজেদের বাঁচাতে আমাকে ফাঁসাতে মিশন নিয়ে নেমেছেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি এ সময় জেলা পরিষদের চেক জালিয়াতির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান।