রুতুরাজ ঝড়ে জয় দিয়ে দ্বিতীয়পর্ব শুরু চেন্নাইয়ের

স্পোর্টস ডেস্ক:

করোনার কারণে মাঝ পথে আইপিএলের চতুর্দশ আসর বন্ধ হয়েগিয়েছিল। শেষমেষ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আইপিএল ২০২১-এর দ্বিতীয়পর্ব শুরু হয়েছে আজ (রোববার)। এই পর্বে রুতুরাজ গাইকদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে চেন্নাই সুপার কিংস। নিয়মিত অধিনায়ক রোহিত শর্মা না খেলার কারণে আজ মুম্বাইকে নেতৃত্ব দেন কাইরন পোলার্ড। কিন্তু তার সূচনাটাও সুখকর হল না। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে ২০ রানে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে মহেন্দ্র সিং ধোনির সিএসকে।

১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৩৬ রানেই থেমে যায় মুম্বাই। সৌরভ তিওয়ারি (৪০ বলে অপরাজিত ৫০) শেষ পর্যন্ত লড়াই করলেও বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি মুম্বাই। কেউ বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি।

চেন্নাই বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডোয়াইন ব্রাভো। ৪ ওভারে ২৫ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন তিনি। শেষ ওভারটিতেও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ক্যারিবীয় এ পেসার।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। কঠিন হলেও টি-টোয়েন্টিতে অসম্ভব নয়। তার ওপর উইকেটে ছিলেন সেট ব্যাটসম্যান সৌরভ। কিন্তু ব্রাভো ওই ওভারে মাত্র ৩ রান খরচ করেন, তুলে নেন দুটি উইকেটও।

এর আগে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ দাঁড় করায় চেন্নাই। অথচ প্রথম পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। সেখান থেকে ১৫৬ পর্যন্ত যাওয়ার মূল কারিগর ডানহাতি ওপেনার রুতুরাজ গাইকদ।

ট্রেন্ট বোল্ট ও অ্যাডাম মিলনের তোপে মাত্র ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও দমে যাননি রুতুরাজ। রবীন্দ্র জাদেজাকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে গড়েন ইনিংস। আর শেষদিকে ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে মিলে তোলেন ঝড়। শুরু থেকে শেষপর্যন্ত খেলে রুতুরাজ করেছেন ৫৭ বলে ৮৮ রান।

বোল্টের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে লেগ বাই থেকে মাত্র একটি রান করতে পারে চেন্নাই, ওভারের পঞ্চম বলে হারায় ফাফ ডু প্লেসির উইকেট। দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে ডু প্লেসির মতোই রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরে ফেরেন মঈন আলি। একই ওভারের শেষ বলে কনুইয়ে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যান আম্বাতি রাইডু।

চেন্নাইয়ের বিপদ আরো বাড়ে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সুরেশ রায়নাও আউট হয়ে গেলে। ট্রেন্ট বোল্টের বলে এলোপাথাড়ি ব্যাট চালাতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন রায়না। নিজের ব্যাটের নিচের অংশ ভাঙার পাশাপাশি উইকেটটিও খোয়ান আইপিএলের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান রায়না।

তখন দলের সংগ্রহ ৭ রানে ৩ উইকেট। তরুণ রুতুরাজকে নিয়ে চাপ সামাল দেয়ার মিশনে নামেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিন্তু পারেননি বেশি দূর যেতে। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে তাকে সাজঘরে পাঠান মিলনে। বড় শট খেলার চেষ্টায় বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন ২ রান করা ধোনি।

পাওয়ার প্লে শেষে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ ছিলো ৪ উইকেটে ২৪ রান। সেখান থেকে কোনোমতে সম্মানজনক স্কোরের আশায়ই হয়তো ছিলো চেন্নাইয়ের ভক্ত-সমর্থকরা। কিন্তু ভিন্ন চিন্তাই ছিলো রুতুরাজের। তবে শুরুতেই হাত খুলে খেলতে পারেননি তিনি। ফলে ইনিংসের ১০ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের স্কোর দাঁড়ায় মাত্র ৪৪ রান।

রুতুরাজ প্রথমবারের মতো হাত খোলেন ইনিংসের ১২তম ওভারে গিয়ে। ক্রুনাল পান্ডিয়ার করা সেই ওভারের দ্বিতীয় বলে হাঁকান ছক্কা। সঙ্গে জাদেজার হাঁকানোর দুই চারের মারে সেই ওভার থেকে আসে ১৮ রান। তবু সে অর্থে বাড়ছিল না দলীয় সংগ্রহ। ইনিংসের ১৫ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ হয় ৪ উইকেটে ৮৭ রান।

শেষ ৫ ওভারে মুম্বাইয়ের বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দেন রুতুরাজ। ষোলোতম ওভারের শুরুতে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৯ বলে ৪৬ রান করে। শেষের ৫ ওভারে আরো ১৮ বল খেলে যোগ করেন ৪২ রান। ষোলোতম ওভারে ১১ রান নেয়ার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো চেন্নাইয়ে রানরেট ছয়ের বেশি হয়।

ইনিংসের ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা হজম করলেও চতুর্থ বলে জাদেজাকে ফিরিয়ে ৮১ রানের জুটি ভাঙেন বুমরাহ। আউট হওয়ার আগে ৩৩ বলে ২৬ রান করেন জাদেজা। এরপর শুরু হয় রুতুরাজ ও ব্রাভোর তাণ্ডব। তবে ১৮তম ওভারে ১০ রানের বেশি নিতে পারেননি দুজন।

রুতুরাজ-ব্রাভোর আসল তোপের মুখে পড়েন বোল্ট। ইনিংসের ১৯তম ওভারটি করতে এসে তিন ছয় ও এক চারের মারে ২৪ রান খরচ করে বসেন বোল্ট। যেখানে ছক্কা তিনটিই হাঁকান ব্রাভো। বুমরাহর বলে শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৮ বলে ২৩ রান করেন ব্রাভো। আর ইনিংসের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ৮৮ রানে অপরাজিত থাকেন রুতুরাজ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)