হৃদরোগের ঝুঁকি আছে কি না বুঝবেন যে পরীক্ষায়
অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে বর্তমানে অনেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। যাদের বেশিরভাগই কম বয়সী। আগে সবারই ধারণা ছিল, বয়স বাড়লেই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে! তবে এ ধারণা ভুল। কারণ হৃদরোগে অল্পবয়সীরাও আক্রান্ত হতে পারেন। এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগী মারাও যেতে পারেন।
হৃদ্যন্ত্র থেকে পাকস্থলী হয়ে যে ধমনীটি শরীরের নিচের অংশে নেমে গেছে, তার মধ্যখানে আছে একটি ফোলা অংশ। কারও কারও ক্ষেত্রে এই অংশ বেশি মাত্রায় ফুলতে থাকে।
একসময় তা ফেটেও যেতে পারে। এটিই হৃদ্যন্ত্রের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি দ্রুত চিকিৎসা না করলে ওই রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলা হয়ে ‘অ্যাবডোমিনাল এয়ারটিক অ্যানিউরিজম’। এ সমস্যা বিপজ্জনক হওয়ার আগে আবার টেরও পাওয়া যায় না।
আর যখন টের পাওয়া যায়, তখন রোগীকে বাঁচানো কষ্টকর হয়ে পড়ে। প্রায় ৮০ শতাংশ রোগীরই মৃত্যু হয় এ অসুখে। তবে এ সমস্যা আগে থেকেও টের পাওয়া যায় একটি মাত্র পরীক্ষা করেই।
সম্প্রতি আমেরিকার জার্নাল অব কার্ডিয়োলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুযায়ী, বুড়ো আঙুল পরীক্ষা করেই জানা যাবে আপনি হৃদরোগে আক্রান্ত কি না।
এমনটিই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা ৩০৫ জন রোগীর উপর এ বিষয়ে পরীক্ষা করেছেন। তাদের মতে, অ্যাবডোমিনাল এয়ারটিক অ্যানিউরিজেমের সমস্যা অনেক আগে থেকেই টের পাওয়া সম্ভব।
কীভাবে পরীক্ষাটি করবেন?
প্রথমে বাম হাতের বুড়ো আঙুল তালু বরাবর প্রসারিত করুন। যতদূর সম্ভব নিয়ে যান। যদি তালুর ভেতরেই আপনার বুড়ো আঙুল থেকে যায়, তাহলে চিন্তার কারণ নেই।
তবে বুড়ো আঙুলের শীর্ষভাগ যদি তালুর সীমানা অতিক্রম করে যায়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার অ্যাবডোমিনাল এয়ারটিক অ্যানিউরিমে সমস্যা থাকতে পারে।
এ সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদের পেশি ও হাড়ের সংযোগ স্থলগুলো শিথিল হয়ে যায়। এর ফলেই বুড়ো আঙুলটিকে তালু বরাবর টেনে অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া যায়। কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি হয় না।
বুড়ো আঙুল আর তালুর এই পরীক্ষা অনেক আগে থেকেই অ্যাবডোমিনাল এায়রটিক অ্যানিউরিজমের পূর্বাভাস দিতে পারবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। এতে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কাও অনেকটা কমানো যাবে।
চিকিৎসকদের মত কী?
এ বিষয়ে ভারতের এসএসকেএম’র হৃদ্রোগ বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক সরোজ মণ্ডল জানান, অ্যাবডোমিনাল এয়রটিক অ্যানিউরিজমের বিষয়ে আরও ভালোভাবে জানতে হবে। তালুর বাইরে বুড়ো আঙুল টেনে বের করতে অনেকেই হয়তো পরবেন।
‘কারণ মারফান সিন্ড্রোমে আক্রান্তরা অতিরিক্ত লম্বা হন। এমনকি তাদের পেশি বা হাড়ের সংযোগস্থল অতিরিক্ত নমনীয় হয়। তার মানে এটা নয় যে এমন ব্যক্তি হৃদরোগে আক্রান্ত।’
বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘অ্যাবডোমিনাল এয়ারটিক অ্যানিউরিজম’এর প্রধান কারণ হলো ধূমপান ও মানসিক চাপ। এই দুটি অভ্যাস ত্যাগ করতে পারলেই হৃদরোগের আশঙ্কা কমতে পারে।
সূত্র: দ্য সান/ফক্স নিউজ/হ্যাম্পশায়ার ক্রনিক্যাল