মতবিনিময় সভায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা, স্বাভাবিক জোয়ারে প্লাবিত হচ্ছে উপকূলের নিম্নাঞ্চল
নিজস্ব প্রতিবেদক:
উপকূলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়ে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছেন, আগে ঝড় ও জলোজ্ঝাসে উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতো। এখন স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেই উপকূলের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যাচ্ছে। ফলে ওই অঞ্চলের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে।
শনিবার খুলনার কয়রায় ফেইথ একশন মিলনায়তনে নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ এবং বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ ও ‘ফেইথ ইন একশন’ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তারা এই দাবি জানান। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন একাত্তর টেলিভিশনের যুগ্ম প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন, ফেইথ ইন একশনের তিমন বাড়ৈ, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ রাজীব বাছাড়, সাংবাদিক নিজামুল হক বিপুল, সাজ্জাদ হোসেন, কামাল হোসেন ও গাজী শাহনেওয়াজ, ছাত্রনেতা জুবায়ের হোসেন, উন্নয়ন কর্মী নাদিয়া সুলতানা প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরপর করোনা পরিস্থিতি এবং সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের আঘাত সংকট আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। উপকূলের মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষত এখনো বহন করে বেড়াচ্ছে। আকাশে মেঘ দেখলেই ওই এলাকার জনমনে আতংক দেখা দেয়। এই আতংক থেকে রক্ষায় উপকূলে টেকসই বাঁধের পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে।সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উপকূলের অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, গুরুত্ব বিবেচনায় না নিয়ে ও যাচাই-বাছাই ছাড়াই অনেক প্রকল্প নেওয়া হয়। এতে সরকারী অর্থের অপচয় হয়। অথচ উপকূলের জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলো পাসের অপেক্ষায় পড়ে থাকে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ‘কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সকলকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে’ বাস্তবায়ন করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উপকূলের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
সভায় উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়া সারাদেশের ন্যায় উপকূলীয় এলাকায় পৌছালেও টেকসই বেড়িবাঁধের অভাবে তা আজ ঝুঁকির মুখে। তাই টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে বিশেষ বরাদ্দ রাখতে হবে। বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণে বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে। জাতীয় বাজেটে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দকৃত অর্থ বাস্তবায়নে সমম্বয় করে উপকূলীয় এলাকার জনপ্রতিনিধি ও জনগণকে সম্পৃক্ত করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। লবণাক্ততার আগ্রাসনের শিকার উপকূলের সুপেয় পানির সংকট নিরসন এবং মৎস্য ও কৃষি উৎপাদন বাড়াতে সুনির্দ্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। উপকূলের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে অবিলম্বে হাওড় উন্নয়ন বোর্ডের ন্যায় উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
Please follow and like us: