ক্লিনিকের মালিকানা নিয়ে দ্বন্দ্ব, ইনজেকশন দিয়ে দুই ভাইকে হত্যা

নিউজ ডেস্ক:

বগুড়ায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দুই মালিককে ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে আরেক মালিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে হাতেনাতে ধরা পড়েন সাদ্দাম। এরপর শুক্রবার তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। সাদ্দাম জেলার গাবতলী উপজলোর রামশ্বেরপুর গ্রামের জিন্নাহ মিয়ার ছেলে। তিনি বগুড়া সদরের পীরগাছায় অবস্থিত সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অন্যতম মালিক।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম জানান, ব্যবসা নিয়ে ক্লিনিকের অপর দুই মালিকের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই জেরে কৌশলে হত্যাকাণ্ডের পথ বেছে নেন তিনি। ক্লিনিকের মালিক হলেও তিনি নার্স হিসেবে কাজ করতেন।

নিহতরা হলেন- শাহিন আলম ও সেলিম হোসেন। তারা সম্পর্কে দুই ভাই। সেলিমকে বৃহস্পতিবার রাতে ক্লিনিকেই ইনজেকশন পুশ করে হত্যা করা হয়। এর দুই মাস আগে একই কায়দায় শাহিন আলমকেও হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সেলিম। এরপর তাকে প্রথমে ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে সুস্থ না হলে রাতেই তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই কৌশলে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করেন সাদ্দাম। এর ১০ মিনিট পর সেলিম মারা যান।

বিষয়টি সেখানের একজন টের পেয়ে যান। পরে সাদ্দামকে হাতেনাতে ধরেন তিনি। একই সঙ্গে তার কাছ থেকে বিষাক্ত ইনজেশনের স্যাম্পল উদ্ধার করা হয়।

এদিকে শাহিন আলমকেও একই কায়দায় বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করে হত্যার অভিযোগ ওঠে সাদ্দামের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যাওয়ায় একই কায়দায় শাহিনের ভাই সেলিমকেও হত্যা করেন সাদ্দাম। শুক্রবার বিকেলে সাদ্দামের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সেলিমের বড় ভাই আব্দুস সামাদ।

আব্দুস সামাদ জানান, তারা সাতজন মিলে পীরগাছা বাজারে নয় মাস আগে সালমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যান্ড ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সাতজনের মধ্যে তাদের পরিবারের চারজনের অর্ধেক এবং সাদ্দামের একাই অর্ধেক শেয়ার। সাদ্দাম নিজে ক্লিনিকে নার্স হিসেবে ছিলেন। এছাড়া সেলিম ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করতেন।

গ্রেফতারের পর সাদ্দাম জানান, ক্লিনিকটির পেছনে তার অবদান এবং পরিশ্রম সবচেয়ে বেশি। কিন্তু সেলিম ও শাহিন কোনো কাজ না করেই বসে থেকে টাকার ভাগ নিতেন। এ ক্ষোভ থেকে কৌশলে সেলিমকে হত্যা করেন তিনি। তবে দুই মাস আগে আরেক ভাই শাহিনকে হত্যার ব্যাপারে জানতে চাইলে সাদ্দাম নিশ্চুপ থাকেন।

বগুড়া সদর থানার ওসি সেলিম হোসেন বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যার কথা সাদ্দাম হোসেন স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় সাদ্দামের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)