আশাশুনিতে ভুল অস্ত্রপচারে অকালে ঝরে গেল প্রসূূূূতি মায়ের জীবন
ডেস্ক রিপোর্টঃ
আশাশুনির কুল্যার মোড়ে লাইসেন্স বিহীন মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অনভিজ্ঞ ডাক্তারের ভুল অস্ত্রপচারের কারণে অকালে ঝরে গেল প্রসূূূূতি মায়ের জীবন। সরেজমিন ঘুরে ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকালে কুল্যা ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের সেলিমের স্ত্রী তহমিনা খাতুন (২০) সন্তান প্রসবের জন্য কুল্যার মোড়ে মা সার্জিকাল ক্লিনিকে ভর্তি করান।
এরপর ক্লিনিকের মালিক তরুণ কুমার মন্ডল তাদেরকে দ্রুত সিজারের কথা বলেন। তরুণ কুমার মন্ডল আরও বলেন, দ্রুত সিজার না করলে সমস্যা হবে। এসময় রোগির স্বামী সিজারের সম্মতি জানান এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধসহ আনুষঙ্গিক সামগ্রী ক্রয় করেন। এসময় সুচতুর ক্লিনিক মালিক অনভিজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে এনেসথেসিয়াসহ সিজার কার্য সম্পন্ন করেন।
এর পর রোগীর ব্লিডিং শুরু হলে অনভিজ্ঞ ডাক্তার বলেন সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনারা ধৈর্য ধরেন। এরপর কয়েক ঘণ্টা চেষ্টার পরেও যখন রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না, তখন ক্লিনিক মালিক তরুণ সুকৌশলে রোগীকে সাতক্ষীরা রেফার করেন এবং সাতক্ষীরা পৌঁছানো মাত্রই রোগী মারা যায়। অনভিজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা ভুল অস্ত্রপাচারের কারণে প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রোগীর আত্মীয়-স্বজন ক্লিনিকের সামনে এসে ক্লিনিকের মালিক তরুণকে অবরুদ্ধ করে রাখে। ওই দিন গভীর রাতে ক্লিনিক মালিক ও পরিচালক তরুণ কুমার মন্ডল মৃত তহমিনা খাতুনের পরিবারকে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে দফারফা করে রেহাই পায় বলে অভিযোগ উঠেছে।
ক্লিনিক মালিক তরুণ কুমার মন্ডল পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের কাটাবুনিয়া গ্রামের ক্ষিতীশ চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। একাধিক সূত্রে আরও জানা গেছে, সে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে লাইসেন্সবিহীন ক্লিনিক চালিয়ে যাচ্ছে। এই লাইসেন্সবহীন ক্লিনিক পরিচালনা করে তরুণ কুমার মন্ডল কুল্যার মোড়ে ৮ কাঠা জমি এক কোটি টাকায় ক্রয় করেন। তিনি ২০২০ সালে লাইসেন্সবিহীনে অবৈধ ক্লিনিক পরিচালনার কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানাসহ জেল খাটেন। এরপর জামিনে বের হয়ে আবার পূর্বের ন্যায় বহাল তবিয়তে অবৈধভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করে যাচ্ছে। ক্লিনিক মালিক তরুণ কুমার মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কেন দেশের কোন ক্লিনিকে শতভাগ লাইসেন্স নেই। আমি তো সবকিছুই ম্যানেজ করে ক্লিনিক পরিচালনা করে যাচ্ছি। লাইসেন্স না করে যদি তার চেয়ে কম টাকা দিয়ে আমি জরিমানা ও জেল-হাজত বেরিয়ে আসতে পারি তাহলে তো কোন সমস্যা নেই বরং আমার অনেক টাকা বেঁচে যাবে। এলাকার সচেতন মহল এ অবৈধ মা সার্জিক্যাল ক্লিনিকের মালিক তরুণের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন।