কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে পরীমনি
অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনিকে কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছে। বনানী থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাকে রিমান্ডে চাইবে সিআইডি।
দ্বিতীয় দফায় দুদিনের রিমান্ড শেষে গত শুক্রবার পরীমনিকে আদালতে হাজির করেছিল সিআইডি। আদালত সেদিন পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত সোমবার আবার পরীমনির জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। এ জামিন আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল বুধবার। কিন্তু গতকাল শুনানি শুরুর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, পরীমনিকে আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেছে সিআইডি। পরে আদালত আজ এ আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেন।
পরীমনিকে প্রথম দফায় চার দিন ও দ্বিতীয় দফায় দুদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি।
৪ আগস্ট বনানীর বাসা থেকে পরীমনিকে গ্রেফতার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। মামলার বাদী র্যাব ১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ৪ আগস্ট বাদীসহ র্যাব ১-এর সদস্যরা গুলশান-১ গোলচত্বরে অবস্থান করছিলেন। বিকাল ৪টা ৫ মিনিটের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, বনানীর একটি বাসায় পরীমনি তার সহযোগী আশরাফুল ইসলামের মাধ্যমে বিদেশি মদ সংগ্রহ করে মজুত করে রেখেছেন। তারা বাসায় অবস্থান করছেন। পরে বাসার পঞ্চম তলায় অভিযান চালানো হয়। পরীমনির বাসা থেকে নারী র্যাব সদস্যের সহায়তায় তাকে আটক করা হয়। বাসার একটি কক্ষে কাঠের ফ্রেমের ভেতর থেকে বিদেশি মদ জব্দ করা হয়।
এর পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে প্রযোজক ও অভিনেতা নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান শুরু করে র্যাব। প্রায় দুই ঘণ্টার অভিযান শেষে রাজকে বনানীর বাসা থেকে আটক করে রাত ১০টা ১৫ মিনিটের দিকে নিয়ে যান র্যাব সদস্যরা।
রাজের বাসা থেকেও মাদক ও পর্নোগ্রাফি তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব। এ ঘটনায় রাজের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইন ও পর্নোগ্রাফি আইনে পৃথক দুটি মামলা করে র্যাব।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়, পরীমনির বাসা থেকে একটি সাদা জিপারে রাখা চার গ্রাম আইস বা ক্রিস্টাল মেথ জব্দ করা হয়। আরও জব্দ করা হয় এক ব্লট ভয়ঙ্কর এলএসডি মাদক। পরীমনির বাসা থেকে জব্দ বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকের মোট দাম দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৭ হাজার টাকা।
প্রসঙ্গত, ৪ আগস্ট বিকালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তাৎক্ষণিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন পরীমনি। এ সময় র্যাবের পক্ষ থেকে পরীমনিকে তার বাসায় অভিযানের কথা জানানো হয়। কিন্তু তিনি লাইভে এসে মিথ্যা তথ্য ও অপপ্রচার চালানো শুরু করেন।
লাইভে পরীমনি বলেন, আমি ঘুমাইতেছিলাম। বাসার নিচে মেইনগেটে সব ভাঙচুর করে তারা ওপরে চলে আসছে। এখন বাসার গেট ভাঙচুরের চেষ্টা করছে। বারবার কলিংবেল বাজাচ্ছে। পুলিশসহ কেউ শুনছে না, আমি সবাইকে ফোন করলাম, কেউ আসছে না।
মরে গেলে আসবেন ভাই? তিনি আরও বলেন, আমার মনে হচ্ছে এরা ডাকাত। একেক জনের একেক রকমের চেহারা। এরা যদি ডাকাত হয় কী করবেন? আমি এটার ভয় করছিলাম। আমি আজ লাইভ কাটব না।
এখানে থানা থেকে আসতে কতক্ষণ লাগে? মানুষ কি মরে যাবে? তারা নাকি কেউ জানে না, কোন থানা থেকে আসছে, সিআইডি না র্যাব কেউ কিছু বলতে পারছে না।
পরীমনি সবার উদ্দেশে আরও বলেন, আমি বুঝতেছি না আমি মরে গেলে আসবেন? আমি তো হার্টআট্যাক করব। ব্রেনস্ট্রোক করে মরে যাব। এটা একদম টর্চার। লাইভে থেকে আলোচিত এই চিত্রনায়িকা কারও একজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
তখন তাকে বলতে শোনা যায়, আমি মরে যাব। আর পৃথিবী দেখব না! আমি লাইভ কাটব না। আমি দেখিয়ে মরব। আমার সঙ্গে কেউ কিছু করে পার পাবে না। আর মেরে ফেললে তো কোনো কিছু করার নেই।