জামিন পেলেন হেলেনা জাহাঙ্গীর
অনলাইন ডেক্স:
রাজধানীর পল্লবী থানার টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় আলোচিত হেলেনা জাহাঙ্গীরের জামিন দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালত এই জামিন মঞ্জুর করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা সেলিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন এ মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে, গত ৩ আগস্ট জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ১০ দিন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পাঁচ দিন এবং পল্লবী থানায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ও প্রতারণার মামলায় সাত দিন করে মোট ১৪ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করা হয়। এরপর শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম শাহিনুর রহমান পল্লবী থানায় দুই মামলায় আট দিন এবং ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসী গুলশান থানার দুই মামলায় ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে গত ২৯ জুলাই রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র্যাব। এরপর দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে অভিযান চালানো হয়। আটকের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর গত ৩০ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গুলশান থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। এরপর গত ৩০ জুলাই গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীর অনলাইন ভার্চুয়াল জগতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী, বিভিন্ন সংস্থাকে কটূক্তি করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করাসহ মিথ্যা তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো বা বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি করার প্রচেষ্টায় লিপ্ত আছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে ছায়া তদন্ত শুরু হয়। এরপর গত ২৯ জুলাই র্যাব জানতে পারে, আসামি গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন। তাকে গ্রেফতার না করলে আত্মগোপনসহ দেশ ত্যাগের সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, চাকু, বৈদেশিক মুদ্রা, ক্যাসিনো সরঞ্জাম ও হরিণের চামড়া উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, হেলেনা জাহাঙ্গীর অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লী মাতা’ ও ‘প্রবাসী মাতা’ হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ চক্রটি এসব ভুয়া খেতাবের অপপ্রচার চালাত। বিভিন্ন দেশি সংস্থা ও ব্যক্তি থেকে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে গ্রেফতারকৃতের খেতাব প্রচার প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। এছাড়া তিনি অস্ট্রিয়া প্রবাসী আলোচিত সেফুদাকে নানা ডাকতেন। তার সঙ্গে সেফুদার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।
সূত্র:ডেইলি বাংলাদেশ।