কোমর ব্যথা, পায়ে ঝিনঝিন ভাব হওয়ার কারণ ও করণীয়
চিকিৎসা ডেস্ক:
সুস্থতা সবারই কাম্য। তবে নানা কারণেই আমাদের দেহে আসুখ বাসা বাঁধে। বিশেষ করে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। কারণ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে। শরীর দুর্বল হতে থাকে। এই সময় বেশি দেখা দেয় কোমর ব্যথার সমস্যা। অনেকের আবার অল্প বয়সেই কোমর ব্যথা ও হাঁটতে গেলে পায়ে ঝিনঝিন করার সমস্যা দেখা দেয়। এসময় হাঁটাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
তবে এই সমস্যা যদি ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে দেখা দেয় তবে তা বিপদের কারণ। যদিও কোমর ও পায়ে ব্যথা খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। তারপরও ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা মোটেও অবহেলার নয়।
দেখা যায় ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ব্যথার ওষুধ সেবন করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ খেয়ে ব্যথা কমানো রোগকে আরো জটিল ও জীবনসংহারী করে তুলতে পারে। এ রোগীদের তলপেট ও পায়ের রক্তনালি সংকুচিত বা ব্লক হয়ে পায়ের আঙুলে পচন সৃষ্টি করে। অপারেশন করে নষ্ট এ অংশ কেটে ফেলা ছাড়া তখন আর কোনো উপায় থাকে না।
এভারকেয়ার হাসপাতালের কার্ডিওভাসকুলার ও ভাসকুলার সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. কে কে পান্ডে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।
অনেকের বসা অবস্থায় কোমর ব্যথা ও হাঁটতে গেলে পা ভার ও ঝিনঝিন ভাব করে। হাঁটা আরো বেশি হলে বা দৌড়ালে ব্যথার তীব্রতা বাড়ে। এ রোগীদের দাম্পত্য জীবনেও সমস্যা দেখা দেয়। ডায়াবেটিস রোগীদের এ সমস্যা হলে তারা বিভিন্ন চিকিৎসকের কাছে যান এবং বছরের পর বছর ব্যথা নিরাময়ের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওষুধ এবং কোমর ও পায়ের এক্সারসাইজ করেন।
এরপরও ব্যথা না কমলে তারা হতাশ হয়ে পরে নিজেরাই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে ব্যথার ওষুধ, মাংসপেশি শিথিলকরণের ওষুধ ও নার্ভের বিভিন্ন ভিটামিন জাতীয় ওষুধ খেতে থাকেন। এর এক পর্যায়ে তাদের পা ও আঙুল কালো বর্ণ ধারণ করে ঘায়ের সৃষ্টি হয়- তখন সার্জনের শরণাপন্ন হলে তারা বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে চিকিৎসা করেন।
হওয়ার কারণ
ডায়াবেটিস রোগীদের তলপেট ও পায়ের রক্তনালিতে ফ্যাট, কলস্টেরল ও ক্যালসিয়াম জমা হয়ে রক্তনালি সংকুচিত করে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে মাংসপেশি, হাড়, নার্ভ পর্যাপ্ত পুষ্টি না পেয়ে তাদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং রোগীর চলাফেরায় কষ্ট হয়। ডায়াবেটিস রোগী যারা ধূমপান করেন বা বিভিন্ন তামাক গ্রহণ করেন এবং কায়িক পরিশ্রম বা ব্যায়াম না করেন ও যারা স্থূলকায় তাদের এ সমস্যা অল্প সময়ে প্রকট আকার ধারণ করে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
তলপেট ও পায়ের কালার ডপলার, সিটি ও এমআর এনজিওগ্রাম করে এ সমস্যা সহজে নির্ণয় করা যায়।
চিকিৎসা
হার্টের ব্লকের মতো পায়ের ব্লকেও স্টেনটিং বা রিং বসানো যায়। ক্ষতিগ্রস্ত ধমনির বাইপাস সার্জারি ও প্রসথেটিক গ্রাফট করা হয়। এ রোগীদের ভাসকুলার সার্জনগণ চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।