বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থলপথের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রেলেপথেও বেড়েছে ভারত থেকে পণ্য আমদানি

আঃজলিল শার্শা যশোর প্রতিনিধিঃ
বেনাপোল বন্দর দিয়ে স্থলপথের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রেলেপথেও বেড়েছে ভারত থেকে পণ্য আমদানি। গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে রেলপথে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ৫ লাখ ৪০ হাজার ৬৫৯ মেট্রিকটন বিভিন্ন ধরনের পণ্য। এ সময় রেল ভাড়া বাবদ সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩১ কোটি ৪০ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩০ টাকা।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে এ পথে ভারত থেকে পণ্য আমদানি হয়েছে এক লাখ ৮৪ হাজার ৭৩ দশমিক ৯ মেট্রিকটন। যা থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৮ কোটি ৮৮ লাখ ২৬ হাজার টাকা। বুধবার (১৪ জুলাই) সকালে বেনাপোল রেল স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান আমদানি ও রাজস্ব আহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, স্থলপথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারতের বনগাঁর কালিকতা ট্রাক পার্কিং সিন্ডকেটের কাছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা জিম্মী হয়ে পড়েছিল। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সিরিয়ালের নামে ট্রাক প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করতো। করোনা শুরুতে তাদের অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। এতে আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রভাব পড়ে দেশীয় বাজারে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে গত বছরের ৪ জুন  থেকে সরকার রেলে সব ধরনের পণ্যের আমদানি  বাণিজ্যের অনুমতি দেয়।
সাশ্রয়ী আর নিরাপদ হওয়ায় দিন দিন ব্যবসায়ীরা রেলপথে বাণিজ্যে ঝুকতে থাকে। আগে মাসে ৪ থেকে ৫টি ওয়াগানে পণ্য আমদানি হলেও বর্তমানে প্রতিদিন কার্গো রেল, সাইডোর কার্গো রেল এবং প্যার্সেলভ্যানের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব পাচ্ছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভারতীয় ট্রাক পার্কিং সিন্ডিকেট জিম্মি করে রেখেছিল। এখন ব্যবসায়ীরা অনেকটা সিন্ডিকেট মুক্ত। বর্তমানে রেলপথে সব ধরনের পণ্য আমদানি সচল রয়েছে। এতে গত বছরের তুলনায় এ বছর আমদানি বাড়ার পাশাপাশি রেলখাতে সরকারের চার গুণ রাজস্ব বেশি আদায় হয়েছে।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, কন্টেইনারের মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য শুরু হওয়ায় বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এতে সময় ও খরচ যেমন কমেছে, তেমনি নিরাপত্তাও বেড়েছে। ভারত থেকে স্থলপথের পাশাপাশি  রেলযোগে মালামাল এলে দেশের রেলখাতও  উন্নয়ন হবে। রেলে ভারতে পণ্য রপ্তানির বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় রয়েছে।
রেলওয়ের বেনাপোল স্টেশন মাস্টার শাহিদুজ্জামান জানান, বর্তমানে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারত থেকে স্থলপথের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রেলপথেও পণ্য আমদানি হচ্ছে। তবে বন্দরের রেল ইয়ার্ড না থাকায় পণ্য রাখতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে বন্দরে দুটি রেল ইয়ার্ড নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। চলছে বেনাপোল থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত ব্রডগেজ লাইনের সম্প্রসারণ কাজ। এসব কাজ শেষ হলে এ পথে বাণিজ্য আরও বাড়বে। আগে রেলপথে পাথর ও জিপসাম জাতীয় পণ্য আমদানি হলেও বর্তমানে গার্মেন্টস, কেমিক্যাল ও খাদ্যদ্রবসহ সব ধরনের পণ্য আসছে রেলে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)