ইরাকে করোনা হাসপাতালে আগুন, নিহত বেড়ে ৬৬
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরাকের একটি করোনা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে একশ’র বেশি মানুষ। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আইএনএ’র বরাত দিয়ে আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে দক্ষিণের শহর নাসিরিয়ায় আল-হোসেন টিচিং হাসপাতালে আগুন ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। একই দিনে বাগদাদে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সদর দফতরেও আগুন লাগে। তবে তা দ্রুত নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হয়েছে।
ইরাকে চলতি বছর এ নিয়ে দু’বার কোভিড হাসপাতালে আগুন লাগল। গত এপ্রিলে মজুদ করা অক্সিজেন সিলিন্ডার বিস্ফোরণে অন্তত ৮২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই সময় আরো ১১০ জন আহত হয়েছিলেন।
ইরাকের পার্লামেন্টের স্পিকার মোহাম্মদ আল-হালবৌসি এক টুইটে বলেছেন, ইরাকি জনগণের জীবনরক্ষায় ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রমাণ এ অগ্নিকাণ্ড। এ ধরনের বিপর্যয়কর ব্যর্থতা অবসানের সময় এসেছে। বিক্ষোভের মধ্যে ইরাকের প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদিমী হাসপাতালের প্রধানকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় ইতোমধ্যেই ওই হাসপাতালের ম্যানেজার পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
আর ইরাকি প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ ক্ষোভ জানিয়ে বলেছেন, হাসপাতালে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা ছিল ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলস্বরূপ। স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতালের পরিবেশ। চারদিকে শুধু পুড়ে যাওয়া লাশের স্তূপ। হতাহতের সারিতে স্বজনের লাশ খুঁজতে গিয়ে এক তরুণ বলেন, ‘আগুন এবং নিরীহ রোগীদের হত্যায় দায়ী দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। আমার বাবার লাশ কই?’
প্রাথমিক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে ধারণা করা হচ্ছে, অক্সিজেন ট্যাংক বিস্ফোরণের কারণে আগুনের সূত্রপাত। অগ্নিকাণ্ডের কারণ বের করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জি কার অঞ্চলের গভর্নর। নিহতের স্বজনরাও দেশটির স্বাস্থ্য খাতে চরম অনিয়মের অভিযোগ তোলে পুড়ে যাওয়া হাসপাতালের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন। বিক্ষুব্ধ লোকজন সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। এ সময় পুলিশের সাথে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। তারা কয়েকটি মোটরবাইক এবং গাড়িতে অগ্নিসংযোগও করে।