পরীমনির কথার সঙ্গে ঘটনার মিল পাচ্ছে না পুলিশ

বিনোদন ডেস্ক:

চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়ার পরই তদন্তে নামে পুলিশ। ধরা পড়ে এ ঘটনার মূলহোতাসহ পাঁচজন। তবে সেই মামলার এজাহারের বর্ণনার সঙ্গে পরীমণির বক্তব্যের মিল পাচ্ছেন না তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এ নিয়ে নতুন করে অসংখ্য প্রশ্নের জন্ম হয়েছে।

৯ জুন মধ্যরাতে বোট ক্লাবে পরীমনির সঙ্গে কী ঘটেছিল, তার আদ্যোপান্ত জানতে নানামুখী কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ। এরই মধ্যে বোট ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তারা। কথা বলেছেন এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। এমনকি পরীমনির কাছ থেকেও আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে চাইবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

প্রাথমিক তদন্তে বোট ক্লাবের ঘটনার সঙ্গে পরীমনির অভিযোগের অনেক কিছু মিলছে না বলে মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

ভিডিও ফুটেজে যা দেখা গেল

বোট ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৯ জুন রাত ১২ টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবের সামনে একটি কালো গাড়ি দাঁড়ায়। নামতে দেখা যায় পরীমনি, জিমি ও অমিকে। কিছুক্ষণ পর গাড়ি থেকে বের হন বনিও। ক্লাবের রিসিপশনেও অমির সঙ্গে পরীমনিসহ অন্যদের ঢুকেতে দেখা যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন নাসির ইউ আহমেদ।

দেড় ঘণ্টা পর পরীমনীকে অচেতন অবস্থায় কোলে করে দৌড়ে বের হতে দেখা যায় জিমি ও একজন নিরাপত্তা প্রহরীকে। পেছন আসেন অমিও। ক্লাবে অমির কালো গাড়িতে গেলেও পরীমনি ফিরেছেন সাদা রঙের একটি গাড়িতে। এ সময় অমি সাহায্য তো করেনইনি উল্টো শাসিয়েছেন সবাইকে।

ক্লাবের বাইরের ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ক্লাবে ঢোকার সময় পরীমনি কালো টপস, জিন্সের প্যান্ট পরা ছিলেন। বনি লাল টপস, সঙ্গে জিন্সের প্যান্ট এবং জিমি কালো হাতাকাটা গেঞ্জি ও হাফ প্যান্ট পরা ছিলেন। অমির পরনে ছিল সাদা গেঞ্জি ও গ্যাবার্ডিনের প্যান্ট। শুধুমাত্র অমি ছাড়া বাকি সবাই মাস্ক পরে ক্লাবে প্রবেশ করেন।

কী ঘটেছিল?

ঢাকা বোট ক্লাবে যাওয়ার আগে পরীমনির বনানীর বাসায় বসেই এক বোতল মদ পান করেন সবাই। এ সময় নাট্যপরিচালক চয়নিকা চৌধুরীও ছিল বলে রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন অমি।

অমি বলেছেন, তারা ক্লাবের ভেতরে গিয়ে নাসির ইউ মাহমুদসহ একসঙ্গে মদ পান করেন। শেষে একটি বোতল নেয়া নিয়ে প্রথমে একজন কর্মচারীর সঙ্গে পরীমণি বিতণ্ডা করেন। সেই বিতণ্ডায় যোগ দেন নাসির ইউ মাহমুদসহ আরও কয়েকজন।

গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ বলেন, পরীমনিকে গালে থাপ্পড় মারা ও  তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা অমি স্বীকার করেছেন। মদ্যপ থাকায় পরীমনিকে তারা ধরাধরি করে গাড়িতে এনে তোলেন। তবে জিজ্ঞাসাবাদে চড় দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন নাসির।

পরীমনির অভিযোগ অনুসারে, যেখানে ধর্ষণচেষ্টা ও নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে সেই ‘বারে’ কোনো সিসি ক্যামেরা নেই। তাই পুলিশের হাতে থাকা ভিডিও ফুটেজে ওই রাতে আসলে কী ঘটেছিল সেই চিত্র নেই। তবে ওই বারে পরীমনির সঙ্গে থাকা তার কস্টিউম ডিজাইনার জিমি মোবাইল ফোনে ১৫ সেকেন্ডের ধস্তাধস্তির একটি ভিডিও করেছিলেন। এতে পরীমনির কণ্ঠে শোনা যায়, ‘অমি তুমি এগুলাকে আর ক্লাবে আনবা না।’

এর আগে, গত রোববার রাত পৌনে ১১টার দিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে বনানীর নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। তার আগে পরীমনির একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে মুহূর্তেই তোলপাড় হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)