আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ

নিউজ ডেস্ক:

আজ পহেলা আষাঢ়। ১৪২৮ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসের এই প্রথম দিন আনুষ্ঠানিক সূচনা হবে প্রিয় ঋতু বর্ষার। এ মাসের মধ্য দিয়েই সাধারণত বাংলার প্রকৃতিতে বর্ষা প্রবেশ করে।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘আষাঢ়’ কবিতায় বলেছেন, ‘বাদলের ধারা ঝরে ঝরঝর, আউশের ক্ষেত জলে ভরভর, কালি-মাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিছে দেখ চাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে।’

আষাঢ় বাংলা সনের তৃতীয় মাস। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে জুন-জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে আষাঢ় মাস। আষাঢ় নামটি এসেছে পূর্বাষাঢ়া ও উত্তরাষাঢ়া নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে। এ মাসে প্রচুর বৃষ্টি হয়। গ্রীষ্মের দাবদাহ শেষে আষাঢ়ে বৃষ্টির ছোঁয়ায় বাংলার প্রকৃতি যেন প্রাণ ফিরে পায়। নতুন আনন্দে জেগে উঠে প্রকৃতি। গ্রীষ্মের রুদ্র প্রকৃতির গ্লানি আর জরাকে ধুয়ে মুছে প্রশান্তি স্নিগ্ধতা আর সবুজে ভরে তোলে বর্ষা।

আর বাঙালি মননে সবচেয়ে বেশি রোমান্টিকতা-আধ্যাত্মিকতার সুর বেজেছে এই বর্ষায়। সাহিত্যজুড়ে তারই প্রতিফলন ঘটেছে নানা ভাবে। বহুকাল আগে কালিদাস তার ‘মেঘদূত’ কাব্যে বর্ষা বন্দনা করেছিলেন এভাবে ‘আষাঢ়ষ্য প্রথম দিবসে মেঘমাসৃষ্টসানুং/বপ্রক্রীড়াপরিণতগজ প্রেক্ষণীয়ং দদর্শ।’ আরো আগে বৈষ্ণব কবি বিদ্যাপতি লিখেছিলেন: এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর। /এ ভরা ভাদর/মাহ ভাদর/শূন্য মন্দির মোর…।

গ্রীষ্মের খরতাপে অতিষ্ঠ প্রাণকে শীতলতা দানে জুড়ি নেই বর্ষাকালের। প্রকৃতি প্রেমিক মানুষের কাছে তাই বর্ষা নিয়ে আসে অভিনব ব্যঞ্জনা । আর কবিদের ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। গানে-কবিতায় বাংলার কবিরা করেছেন বর্ষা-বন্দনা। তাই ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল’ দিয়ে প্রণয় নিবেদন করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কাছে বর্ষাকে মনে হয়েছে ‘বাদলের পরী’। তিনি লিখেছেন: রিমঝিম রিমঝিম ঘন দেয়া বরষে।/কাজরি নাচিয়া চল, পুর-নারী হরষে…।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)