জামিন পেলেন সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম
নিউজ ডেস্ক:
সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও ডকুমেন্টের ছবি তুলে চুরির অভিযোগে করা মামলায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিন দিয়েছে আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহের ভার্চুয়াল আদালত শুনানি শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আসামি রোজিনা ইসলামের পক্ষে তার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী ও প্রশান্ত কুমার কর্মকারসহ অন্য আইনজীবীরা জামিন শুনানি করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আদেশ আগামীকাল রোববার দেবেন বলে জানান।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ বলেন, কোনো মানুষ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আসামির বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা করা হয়েছে সেটা জামিন অযোগ্য। আর তাকে জামিন দিলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটবে। এছাড়া আসামির কাছ থেকে আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এ জন্য তাকে জামিন দেয়া ঠিক হবে না।
রোজিনার আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি বলেন, এজাহারে সে রকম কোনো আলামতের বর্ণনা নেই। তাই এ মামলায় জামিন পাওয়াটা আসামির প্রতি কোনো দয়া বা অনুগ্রহ নয়। বরং জামিন পাওয়াটা তার মৌলিক অধিকার।
এর আগে গত ১৮ মে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রোজিনার পাঁচদিনের রিমান্ড নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আরিফুর রহমান সরদার। এ সময় আসামি পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। এরপর আদালতে রিমান্ড আবেদন খারিজ করে গতকাল জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
এদিকে গত ১৭ মে রাজধানীর শাহবাগ থানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী বাদী হয়ে দণ্ডবিধির ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারায় রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের একান্ত সচিবের দফতরে ঢুকে দাফতরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শরীরের বিভিন্ন স্থানে লুকানো এবং মোবাইলের মাধ্যমে ছবি তোলেন রোজিনা ইসলাম। তখন একান্ত সচিব দাফতরিক কাজে সচিবের কক্ষে ছিলেন। এ সময় সচিবের দফতরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য মো. মিজানুর রহমান তাকে বাধা দেন। পরে অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম, উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন, সিনিয়র সহকারী সচিব শারমিন সুলতানা, সচিবের একান্ত সচিব মো. সাইফুল ইসলাম ভূঁঞা, সিনিয়র সহকারী সচিব মোসাদ্দেক মেহদী ইমাম, অফিস সহায়ক মো. মাহফুজুল ইসলাম, সোহরাব হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন এবং অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেসা বেগম তল্লাশি করে তার কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র এবং ডকুমেন্টসের ছবি সম্বলিত মোবাইল উদ্ধার করেন। এতে প্রতীয়মান হয় যে ডকুমেন্টগুলো তিনি চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় সচিবালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে শাহবাগ থানার নারী পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে তাকে জিম্মায় নেন।
মন্ত্রণালয়ের লিখিত অভিযোগে আরো বলা হয়, সম্প্রতি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য চীন, রাশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক বা চুক্তি সই হয়। যেসব বিষয় অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এসব বিষয় যদি জনসম্মুখে চলে আসে তাহলে ওইসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্টের আশঙ্কা করা হচ্ছে।