ভিন্ন হোক এবারের ঈদের প্রস্তুতি
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। সবার মনে আনন্দ থাকলেও রয়ে গেছে ভয়। কারণ পৃথিবী অসুস্থ। আক্রান্ত হয়েছে করোনাভাইরাসে। এই কারণে পাল্টে গেছে পৃথিবীর চিত্র। অনেক পরিচিত দৃশ্যই এখন অপরিচিত। তাইতো ঈদের আনন্দটুকু ভাগ করে নেয়ার শক্তিও যেন হারিয়ে ফেলেছি আমরা।
এদিকে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। থেমে নেই মৃতের মিছিলও। এই পরিস্থিতে কোনদিন কোন প্রিয়জনকে হারিয়ে ফেলব সেই ভয় সবাইকেই তাড়া করে বেড়ায়। তারপরও ঈদ। উৎসবের এই দিন রঙিন না হোক, আনন্দে না কাটুক, অবহেলায় যেন চলে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কেমন হবে এবারের ঈদের প্রস্তুতি-
পরিকল্পনা তৈরি করুন
মহামারির এই সময়ে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখা জরুরি। কারণ অনেকেই চাকরি হারাচ্ছেন, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক ব্যবসা। তাই বিলাসিতা কিংবা অপচয়ের বদলে শুধুমাত্র প্রয়োজনের দিকে নজর দিন। সেজন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা। যতটুকু না হলেই নয়, ঠিক ততটুকু খরচ করুন। পৃথিবীর অসুখ সেরে গেলে আবার আনন্দের দিন ফিরে আসবে। তখন নাহয় প্রয়োজনের পাশাপাশি শখও পূরণ করা যাবে।
ঈদের খাবার
প্রতি বছর ঈদে অনেকরকম খাবারের আয়োজন করা হয় নিশ্চয়ই? এবারের ঈদ যেহেতু অন্যান্য বছরের ঈদের মতো নয় তাই আয়োজন সংক্ষিপ্ত করুন। অল্পতে সন্তুষ্ট থাকার অভ্যাস রপ্ত করুন। সামর্থ্য থাকলেও খরচের লাগাম টেনে ধরুন। টেবিলে দশ-বারো পদের বদলে থাকুক তিন-চার পদ। আপনার দেখাদেখি অন্যরাও শিখবে। বাড়তি যে খরচটা করতেন তা ভাগ করে দিতে পারেন সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে। চাইলে তাদের জন্য ঈদের দিন একবেলা খাবারের আয়োজনও করতে পারেন।
কেনাকাটা হোক অনলাইনে
এখন অনেক সহজেই অনলাইনে প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। এদিকে যত ভিড়, করোনা সংক্রমণের ভয়ও তত বেশি। তাই সংক্রমণ এড়াতে যতটা সম্ভব ঘরেই থাকুন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করুন অনলাইনে। এক্ষেত্রে পরিচিত কিংবা সুখ্যাতি রয়েছে এমন কোনো সাইট বা পেইজ বেছে নিন। অপরিচিত কোনো সাইট বা পেইজে লেনদেন করলে অনেক সময় প্রতারিত হওয়ার ভয় থাকে। অনলাইনে কেনাকাটার মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই পছন্দের পণ্য পেয়ে যাবেন। তাতে সংক্রমণ থেকে দূরে থাকা যাবে সহজেই।
শিশুর জন্য
শিশুকে আপনি যেভাবে গড়ে তুলবেন, সে কিন্তু সেভাবেই গড়ে উঠবে। তাকে ধৈর্য ও ত্যাগের শিক্ষা দিন। বায়না ধরলেই তার সমস্ত আবদার পূরণে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন না। বরং নিজে কম নিয়ে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করার গুণ তার ভেতরে গড়ে তুলুন। শিশু জেদ করলে তাকে বকাঝকা কিংবা প্রহার না করে বুঝিয়ে বলুন। মহামারি কী, কেন আমাদের সতর্ক থাকতে হবে সেকথাও তাকে বোঝান। শিশুদের মন কোমল ও সুন্দর। তারা সুন্দরকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে। এই ঈদে শিশু অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগির আনন্দ শিখুক।
পরের তরে
আপনি যদি সামর্থ্যবান হন তবে শুধু নিজের কিংবা কাছের মানুষের জন্য না ভেবে, সেই মানুষগুলোর জন্যও ভাবুন যাদের সাহায্য খুব দরকার। এই মহামারিতে অনেকেই নিঃস্ব হয়েছেন। এমন অনেক পরিবার আছে যারা লোকলজ্জার ভয়ে কারও কাছে হাত পাততে পারছে না। একটু আশেপাশে তাকালেই এমন অনেককে দেখতে পাবেন। তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। ঈদের পোশাক না হোক, তাদের জন্য কয়েকদিনের ডাল-ভাতের ব্যবস্থা করে দিন। এতে করে মিলবে মানসিক প্রশান্তি। এবারের ঈদের আনন্দ এমন ব্যতিক্রম হলে ক্ষতি কী!