আশাশুনিতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে গোপনে বিয়ে করা স্ত্রী
আশাশুনি প্রতিনিধি:
আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের ফকরাবাদে স্ত্রীর অধিকার পেতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন গোপনে বিয়ে করা স্ত্রী।
গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে তার স্বামী শারিউল্লাহ বাহারের বাড়িতে অবস্থান করছেন একই ইউনিয়নের জামালনগর গ্রামের ফারুক গাজীর মেয়ে। তবে মেয়েটি তার স্বামীর বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর তার বাড়ি থেকে কৌশলে পালিয়ে যায়।
মেয়েটি জানান, ২০০৬ সালে ৮ম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার বিয়ে হয় আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট গ্রামে। সেখানে ২-৩ বছর সংসার করার পর স্বামীর সাথে ঝগড়া হওয়ায় সে বাপের বাড়িতে চলে আসে এবং স্থানীয় সালিশের মাধ্যমে উভয় পক্ষের ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর বাপের বাড়ি থাকা অবস্থায় গত ৩ বছর আগে ফকরাবাদ গ্রামের শাহজাহান আলী সরদারের ছেলে শারিউল্লাহ’র সাথে তার পরিচয় হয়। তারপর তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে এবছরের ২৪ জানুয়ারি আমরা রোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ও পরে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক বিয়ে করি।
বিয়ের পর তারা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বেশ কিছুদিন বসবাস করে। তারপর তারা স্বামী-স্ত্রী ঢাকা থেকে একসাথে ফিরে এসে দু’জন দুজনের বাড়িতে ওঠে। পরবর্তীতে সে তার স্বামীর বাসায় এলে তার শ্বশুর, শাশুড়ী ও ভাই ভাইপোরাসহ বাড়ির লোকজন তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং মারপিট করে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। এনিয়ে গত আনুমানিক এক মাস আগে থানা পুলিশের মাধ্যমে সামাজিক বিচার-শালিসী হলেও তারা তাকে বাসায় তুলছে না। এজন্য কোন উপায় অন্ত না পেয়ে স্ত্রীর অধিকার আদায়ে শুক্রবার পূনরায় স্বামীর বাড়িতে এসে তার ঘরে উঠলে শ্বশুর, শাশুড়ী ও ভাই ভাইপোরাসহ বাড়ির লোকজন তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং মারপিট করে। এরপর থেকে তিনি তার স্বামীর বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন।
পূনার্ঙ্গ স্ত্রীর অধিকার না দেওয়া পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করবেন বলে তিনি জানান।
তিনি আরও জানান, তার স্বামী তার নিকট থেকে বিভিন্ন সময়ে অনেক টাকা পয়সা ও সুবিধা ভোগ করেছে। এসময় তিনি তার স্ত্রীর অধিকার ফিরে পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এবিষয়ে ছেলের বাবা শাহজাহান সরদার জানান, আমার ছেলের এখনো বিয়ের বয়স হয়নি। সে সাতক্ষীরার একটি পলিটেকনিক কলেজে কম্পিউটার বিভাগে ৪র্থ সেমিস্টারে পড়াশুনা করে। তিনি আরও জানান, আমি প্রথম এসব বিষয়ে কিছুই জানতাম না। কিছুদিন আগে জানতে পারি জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখে কে বা কারা প্রলোভন দেখিয়ে আমার ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গেছে। তারপর আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখলাম ওই মেয়ের ভাইকে দিয়ে তাকে কৌশল করে নিয়ে গিয়ে তার মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেয়। এসময় আমার ছেলেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় তারা। তিনি জানান, আমার ছেলের বয়স ১৮ বছর ৬ মাস আর ওই মেয়ের বয়স ৩৩ বছর ৭ মাস। ঐ মেয়ের আগে এক জায়গায় বিয়ে ছিল। সেই ঘরের একটি ১৪ বছরের কন্য সন্তান আছে তার। সেই স্বামীর কাছ থেকে জোর করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে তালাক দিয়েছে সে। শাহজাহান সরদার জানান, ঐ মেয়ের ব্যবসা হয়ে গেছে এটা, সে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে নিয়ে জোর করে বিয়ের নাটক সাজিয়েছে। আমি এমন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক বিচার দাবী করছি। এদিকে, শুক্রবার রাত ৮টায় এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঐ মেয়ে স্ত্রীর অধিকার আদায়ের জন্য তার স্বামীর বাড়ির সামনে অবস্থান করছিলেন।