ভেসে আসা দুটো তিমিই পুরুষ

নিউজ ডেস্ক:

কক্সবাজারের হিমছড়ি ও দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন বালিয়াড়িতে পর পর দুইদিন ভেসে আসা দুটো মৃত তিমিই পুরুষ। এদের আত্মহত্যা এখনো প্রমাণিত হয়নি। তিমি দুটোর শরীর পর্যবেক্ষণ, নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ, বন ও পরিবেশ অধিদফতর এবং সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট।

সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আশরাফুল হক বলেন, তিমি দুটো পুরুষ ছিল। গভীর বঙ্গোপসাগরে বড় কোনো জাহাজের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। সমুদ্রের জোয়ার-ভাটার কারণে একদিন আগে-পরে কক্সবাজার সৈকতের হিমছড়ি ও দরিয়ানগর পয়েন্টে চলে আসে তিমি দুটো। এখানে আত্মহত্যার বিষয়টি এখনো প্রমাণিত হয়নি।

সংশ্লিষ্ট বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, তিমি, হাঙর ও ডলফিন গভীর সাগরে নির্দিষ্ট জোনে চলাচল করে।

গত ৯ এবং ১০ এপ্রিল মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি ও দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসে বালিয়াড়িতে আটকা পড়ে দুটি তিমি। প্রাণী দুটির ওজন ছিল যথাক্রমে- ১০ ও ১২ টন। লম্বায় ৪২ – ৪৫ ফুট এবং প্রস্থ ছিল ২৪- ২৫ ফুট। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের ধারণা- তিমি দুটির বয়স আনুমানিক ১৫-২০ বছর। তিমি দুটি  ‘ব্রাইডস হুয়েল’ অথবা ‘বলিন’ প্রজাতির।

কক্সবাজারের দরিয়ানগর সমুদ্র সৈকতে ভেসে আসা মৃত তিনি

সামুদ্রিক মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে শনাক্ত করা হয়েছিল- সৈকতে ভেসে আসা তিমি দুটি ছিল পুরুষ। উপকূলে ভেসে আসার পর এদের শরীর পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছিল। এ কারণে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর প্রাণী দুটিকে বালিয়াড়িতেই মাটি চাপা দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, ৩-৬ মাস পর মাংসপেশী মাটিতে মিশে গেলে তিমি দুটির কঙ্কাল তুলে কক্সবাজারের ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে গবেষণার জন্য সংরক্ষণ করা হবে।

তিমি দুটি আত্মহত্যা করতে পারে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুর রহমান বলেন, হ্যা পারে। তবে মৃত তিমির জন্য অপর তিমিটি আত্মহত্যা করতে গেলে সেটিকে অর্ধমৃত অবস্থায় সমুদ্রের উপকূল কিংবা জাহাজ থেকে চিহ্নিত করা সম্ভব হতো। এই দুটি তিমির ক্ষেত্রে আত্মহত্যার বিষয়টি এখনো প্রমাণিত হয়নি।

এর আগে  ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে দুটি বিশাল তিমি একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ভেসে এসেছিল। ওই সময় তিমি দুটির সুরতহাল রিপোর্ট ও ময়নাতদন্ত কিছুই হয়নি। এবার ময়নাতদন্তের মাধ্যমে তিমি দুটির মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী পরিবেশবিদরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)