কলারোয়ায় চলছে বোরো ধান কাটার উৎসবঃকৃষকের ঘরে খুশির আমেজ
কামরুল হাসানঃ
কলারোয়ার সর্বত্র শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা ও সংগ্রহের কাজ। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বোরো ধানের ফসলের মাঠ ফাঁকা হয়ে যাবে। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেও কৃষকদের মাঝে এক ভিন্ন ধরণের উৎসবমুখরতা বিরাজ করছে। কারণ খরচের তুলনায় এবার ধানের দাম দ্বিগুণ। যদিও শনিবার সন্ধ্যা রাতে ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনায় কিছুটা বিরূপ অবস্থা সৃষ্টি করলেও শেষ পর্যন্ত বড় ধরণের সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি কৃষকদের। সবমিলিয়ে রোপা ইরির বাম্পার ফলন হওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকদের মুখে। তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা ও সংগ্রহের কাজে। তাদের সাথে কৃষাণীরাও পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। এছাড়া এবার আশার কথা হলো, স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে অনেক জায়গায় কৃষক নন এমন পেশার মানুষও ধান কাটার কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন। যা কৃষকদের উদ্দীপ্ত করেছে অনেকাংশে।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছর এক মণ ধানের দাম ছিল ৮শ থেকে ৯শ টাকা এবার সেখানে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা। অর্থাৎ ধানের দাম অনেকাংশে বেড়েছে । বিগত কয়েক বছরের মধ্যে কৃষকেরা ধানের দাম এই পরিমাণ পাননি বলে অনেকে জানান। এভাবে দাম পেলে কৃষকেরা ধানের আবাদ বাড়িয়ে দেবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
কলারোয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কাদপুর গ্রামের কৃষক হবিবর রহমান, বিক্রামপুর ও বয়ারডাঙ্গা গ্রামের লিয়াকত আলী, সুলতানপুর গ্রামের আজগার আলী জানান, তারা একেক জন দুই বিঘা-পাঁচ বিঘা, ৬ বিঘা নিজস্ব জমির পাশাপাশি আরও দুই-তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ইরি আবাদ করেছিলেন। প্রথম বীজতলা তৈরি করার পর তা গতবছরের তুলনায় চলতি বছরে ঠান্ডা কম থাকায় নষ্ট হয়েছে সীমিত। বীজতলা তৈরি ও জমির আনুষঙ্গিক খরচ মিলে তারা সেই মোতাবেক ধান উৎপাদন করতে পারবেন না বলে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। তবে ধান কাটার এমৌসুমে তারাই বলছেন, ধানের দাম বেশি থাকায় সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো।
এদিকে, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদ হয়েছে।তিনি জানান, আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে লক্ষ্যমাত্রা ৭৫ হাজর মেট্রিকটন উৎপাদনে ছাড়িয়ে যাবে। করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে তিনিসহ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে নিবিড় ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কৃষি অফিসার আরো জানান, বড়ো ধরণের দুর্যোগ না হলে আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধান কাটার কাজ শেষ হবে। সেই সাথে ফলনও আশানুরূপ হবে বলে তিনি জানান।