শ্যামনগরে হিন্দু ছাত্রীকে ধর্মান্তরিত করে বিয়েঃপ্রধান শিক্ষক গ্রেপ্তার
আশিকুজ্জামান লিমন:
হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নাবালিকা ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্মান্তিরত করে বিয়ে করার অভিযোগে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নুরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন কৈয়া গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । এ সময় ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর গ্রামের এক মুদি ব্যবসায়ি জানান, ২০১৯ সালে তার মেয়ে নূরনগর আশালতা বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পাশ করে।
বর্তমানে কার্টুনিয়া রাজবাড়ি কলেজে মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। মেয়ে দক্ষিণ হাজীপুর গ্রামের দীঘির পাড়ে শামীমআহমেদ এর বাড়ির পাশে আফসার মাষ্টারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেতো। পথিমেধ্য নূরনগর আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যারয়ের প্রধান শিক্ষক শামীম আহম্মেদ (৪৮) তাকে উত্যক্ত করতো।
জন্ম সনদ অনুযায়ি মেয়ের জন্ম ২০০৪ সালের পহেলা ডিসেম্বর। গত ২ এপ্রিল শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে প্রাইভেট পড়তে বেরিয়ে দুপুর দু’টোর সময়ও বাড়ি না ফেরায় সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পাওয়ায় পরদিন তিনি শ্যামনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (১৮২)করেন।
৭ এপ্রিল ফেইসবুকে তার মেয়ে ও প্রধান শিক্ষক শামীম আহমেদ খুলনার এক নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে বসে ধর্মান্তরিত হওয়া ও বিয়ে সংক্রান্ত এক নন জুডিশিয়াল স্টাম্পে সাক্ষর করছেন এমন ছবি দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা তাকে জানান। একপর্যায়ে ৭ এপ্রিল তিনি শামীম আহমেদ এর বিরুদ্ধে থানায় মেয়েকে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার অভিযোগে একটি মামলা করেন।
পরদিন তার মেয়েকে উদ্ধার ও প্রধান শিক্ষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে আশালতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়। ১০ এপ্রিল শামীম আহম্মেদকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে নোটিশ প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে কেন তাকে স্থায়ী বহিস্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়। শামীম আহম্মেদ ইতিপূর্বে তিনটি বিয়ে করেছেন বলে তারা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছেন।
কালীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম মোহাইমেনুর রশিদ শুক্রবার বিকেল চারটায় শ্যামনগর থানায় এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানান, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার দুপুর একটার দিকে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানাধীন কৈয়ে বাজারের পার্শ্ববর্তী এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে প্রধান শিক্ষক শামীম আহম্মেদকে গ্রেপ্তার ও ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়।
শামীম আহম্মেদকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার আদালতে পাঠানো হবে। একই দিনে ভিকটিমকে ২২ ধারার জবানবন্দি ও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আদালতে ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।
দৈনিক সাতক্ষীরা/পিএম