ওসির ভয় দেখিয়ে শ্যামনগরে জামাত কর্মীর দখলে সরকারি রাস্তা
সরেজমিনে যেয়ে দেখাযায়, শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের ইছাকুড় মৌজায় গত ২ বছর আগে ১৪ শতক জমি কিনেছেন আব্দুর রাজ্জাক ও ছিদ্দিকুর রহমান। ওই জমি দখলের সাথে সাথে এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০ শতক জমি দখল করে তারা। ৫০ বছর আগের ইট বিছানো চলাচলের রাস্তা কেটে দখলের পর পুকুর খনন করেছে দুই দখলবাজ। এমনকি রাস্তার ইট গুলো উঠিয়ে নিজেদের বাড়ী তৈরির কাজে ব্যবহার করেছে বলে জানান এলাকাবাসী।
স্থানীয় ইউছুফ কাগুচি,হযরত আলী সহ অনেকে জানান, এলাকায় তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। তাদের ফুপাতো ভাই নাকি ঢাকার কোন এক থানার ওসি বলে প্রচার করেন তারা। সরকারি জমি দখলের সময় শ্যামনগর থানার একজন উপ-পরিদর্শকসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যর উপস্থিতে ৫০ বছরের পুরানো রাস্তাসহ সরকারি জমি তারা দখল করে নিয়েছে।আব্দুর রাজ্জাক ও ছিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে তার ওসি ভাইকে দিয়ে হত্যাসহ যেকোন মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করে।
ভুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুর ছবুর কাগুচি জানান, তাদের মামাতো ভাই একজন ওসি। এজন্য সরকারি জমি ও রাস্তা কেটে দখল করে নিয়েছে। জমি দখল করেছে করুক কিন্তু অর্ধশত বছর আগের রাস্তা দখল করে নিয়েছে এটা মেনে নিতে কষ্ট হয়। তিনি আরও বলেন, ছয়টি নাশকতা মামলা থাকা সত্বেও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তার ওসি ভাইয়ের ক্ষমতার জোরে ইট বিছানো রাস্তা কেটে পুকুর খনন করেছে। সরকারি ইট গুলো উঠিয়ে তাদের বাড়ি নির্মাণে কাজে ব্যবহার করেছে।
সরকারি রাস্তা ও জমি দখলের বিষয় রাজ্জাক ও ছিদ্দিকুরের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, তাদের কেনা সম্পত্তি। এজন্য রাস্তা কেটে পুকুর খনন করেছি। ছয়টি মামলার বিষয় স্বীকার করে রাজ্জাক বলেন, হাসান নামে তার একটা মামাতো ভাই পুলিশের একজন ওসি। তার জোরেই সে টিকে আছে তা নাহলে তাকে খুজে পাওয়া যেতনা। তার জমি দখল থেকে আরম্ভ করে জামাতের মামলার বিষয়ও তার ভাই সাহায্য করে বলে স্বীকার করেন তিনি। এমনকি তিনি আরও বলেন তার ওসি ভাই বলেছে তাদের বিরুদ্ধে কেই কিছু বললে তার ভাইকে তাদের নাম ঠিকানা দিতে। তাদের যে কোন মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দিবে বলে তিনি দম্ভ করে সাংবাদিকদের সাথে বলেন। এছাড়াও তিনি জামাতের সক্রিয় কর্মী বলে নিজেকে দাবি করেন।
বিষয়টি জানার জন্য ঢাকার সবুজবাগ থানার উপ-পরিদর্শক হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার আপন ফুপাতো ভাই আব্দুর রাজ্জাক। তিনি পুলিশের একজন উপ-পরিদর্শক পদে সবুজবাগ থানায় কর্মরত আছেন। তার ভাই ভুল বলেছে, তিনি পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন না। এছাড়া তার ফুফাতো ভাইদের সহযোগীতার বিষয় স্বীকার করে বলেন তিনি জামাতের মামলাসহ বিভিন্ন বিষয় তাদেরকে সহযোগিতা করেন। তবে ইছাকুড়ে ১৪ শতক জমির বিষয়ে তাদেরকে সাহায্য করেছেন। সরকারি জমি দখলের বিষয়ে তিনি কিছু জানেননা বলে দাবি করেন। সাধারণ মানুষকে মামলার দিয়ে ফাঁসানোর বিষয় জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ভুরুলিয়া ইউনিয়ন পরিসদের চেয়ারম্যান মাওলানা ফারুক হোসেন বলেন, অদৃশ্য শক্তির জোরে রাজ্জাক ও ছিদ্দিক দুই ভাই সরকারি রাস্তা ও জমি দখল করে নিয়েছে। এজন্য দখলবাজদের উপযুক্ত শাস্তির দাবী জানান । রাজ্জাক ও ছিদ্দিক জামাতের দলের লোক বলে বাড়তি কোন সুবিধা পাবে এটা ভাবার কোন সুযোগ নেই বলে তিনি জানান।