মামলা তুলে না নেয়ায় গৃহবধূকে ধানক্ষেতে নির্যাতন, সেই চাচা গ্রেফতার

ডেস্ক নিউজ:

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে স্বামীর বিরুদ্ধে করা যৌতুক মামলা তুলে না নেয়ায় ধানক্ষেতে ফেলে গৃহবধূকে পেটানো সেই আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতার আনোয়ার হোসেন উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।

সোমবার (২২ মার্চ) ভুক্তভোগী গৃহবধূর ভাই মাহবুব আলম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়ন থেকে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, ভুক্তভোগীর ভাই মাহবুব বাদী হয়ে মামলা দায়ের করার পর রাতেই অভিযান চালিয়ে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে গত ১০ মার্চ উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের বালিহাটা গ্রামে ধানক্ষেতে ফেলে গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তারকে লাঠি দিয়ে পেটান আনোয়ার হোসেন, তার স্ত্রী, ছেলেসহ ৬ জন। সেখান থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন ইয়াসমিনের ভাই মাহবুব আলম। পরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে গত ১৮ মার্চ গৃহবধূ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল আদালতে আবেদন করেন।

রোববার (২১ মার্চ) ভুক্তভোগী গৃহবধূর বড় ভাই মাহবুব আলমের ফেসবুক আইডি থেকে ‘হৃদয়ে ঈশ্বরগঞ্জ’ পেজে গৃহবধূকে পেটানোর ১২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করেন। পরে সেই ভিডিও নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ফুফা আবুল কালামের ছেলে পাবেল মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় ইয়াসমিন আক্তারের। বিয়ের পর থেকে পাবেল যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছেন। এরই মাঝে যৌতুক না দেয়ায় ওই গৃহবধূর দুইবার গর্ভপাত করিয়েছেন স্বামী পাবেল ও তার পরিবারের লোকজন। গত বছরের ১ নভেম্বর ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী ও তার পরিবার ইয়াসমিনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।

পরে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ দিন চিকিৎসা নেন। তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে গত বছরের ৮ নভেম্বর বাদী হয়ে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মো. পাবেল মিয়াকে ১ মার্চ গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

পাবেল মিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর তার চাচা মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেন। এরই জের ধরে গত ১০ মার্চ তিনি মাঠে ছাগল আনতে গেলে চাচা আনোয়ার মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দেন এবং বলেন, মামলা তুলে না নিলে মারধর করা হবে। তখন ইয়াসমিন আক্তার মামলা তুলে নেবেন না বলতেই চাচাতো ভাই তানভীন আলম, চাচা আনোয়ার হোসেন, চাচাতো বোন তানবিনা আক্তার তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে যান। পরে ইয়াসমিনের ভাই তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাপাতালে ভর্তি করেন।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ ইয়াসমিন আক্তার উপজেলার বালিহাটা গ্রামের সৌদি প্রবাসী শহীদুল ইসলামের মেয়ে। তিনি গৌরীপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগে অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ালেখা করছেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)