কৃষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা, লজ্জা সইতে না পেরে আত্মহত্যা

যশোরের চৌগাছায় ধর্ষণ মালার লজ্জা সইতে না সইতে না পেরে বিষপান করে মিজানুর রহমান নামে এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। মৃত মিজানুর রহমান উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাদেখানপুর গ্রামের বাসিন্দা।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রামের এক গৃহবধূ তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অপবাদ সইতে না পেরে মঙ্গলবার সকালে বিষপান করেন মিজানুর রহমান। এ সময় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কোটচাঁদপুর উপজেলা সরকারি হাসপাতালে এবং পরে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

মিজানুর রহমানের প্রতিবেশীরা জানান, মিজানুর রহমানের পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ চলছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে নবনির্মিত বাড়িতে কাজ করছিলেন তিনি। এ সময় গ্রামের এক গৃহবধূ মিজানুর যে ঘরে কাজ করছিল সেই ঘরের মধ্যে যায় এবং গল্প করছিলেন।

এ ঘটনা মিজানুরের স্ত্রী জানতে পেরে তার দেবরের স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঘরের দরজা আটকে দেন। ঘটনার একপর্যায়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি আবু হেনা মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে যান। তিনি উভয় পরিবারকে বুঝিয়ে ওই গৃহবধূকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।

পরে গৃহবধূর স্বামী খবরটি জানতে পেরে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। ওই গৃহবধূ ওইদিন তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং পরের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি চৌগাছা থানায় ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৪০।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি সমিতির কিস্তি দিতে মিজানুরের কাছে টাকা ধার চান। এরপর টাকা দেয়ার কথা বলে মিজানুর তাকে বাড়িতে ডেকে ধর্ষণ করেন। এ সময় চিৎকার করলে মিজানুরের স্ত্রী ও ভাতিজা এগিয়ে এসে ঘরের দরজা খুলে মিজানুরকে পালাতে সাহায্য করেন এবং চোরের অপবাদ দিয়ে তাকে মারধর করেন।

আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, ওই গৃহবধূ ধর্ষণ হয়েছে কি বলতে পারবো না। তবে এ ঘটনার জের ধরেই মিজানুর আত্মহত্যা করেছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল আত্মহত্যার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সম্ভবত ধর্ষণের অভিযোগে মামলার লজ্জা সইতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চৌগাছা থানার এসআই মিজানুর রহমান বলেন, আসামির আত্মহত্যার বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি। ধর্ষণ অভিযোগে মামলা রেকর্ড হওয়ার পরে ওই গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। রিপোর্ট পাওয়া গেলেই বোঝা যাবে ধর্ষণ হয়েছিল কিনা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)