আশাশুনি ঋষি সম্প্রদায়ের ভিটার উপর দিয়ে ভেড়ীবাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার আশাশুনির প্রতাপনগরের কুড়িকাহুনিয়ায় আকস্মিকভাবে দরিদ্র ঋষি সম্প্রদায়ের বাস্তুভিটার উপর দিয়ে ইচ্ছামত ভেড়ীবাঁধ নির্মাণ বন্ধের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়া এলাকার ঋষি সম্প্রদায়ের দরিদ্র ১১টি
পরিবারের পক্ষে আশাশুনি দলিত পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই সরকার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত বছরের ২০ মে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে প্রতাপনগর ইউনিয়নের কুড়িকাহুনিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ভেড়ীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তির্ণ এলাকা। ওই আঘাতে আমাদের রেকর্ডীয় সম্পত্তিসহ অনেক মানুষের সম্পত্তি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। আমাদের চাষাবাদ সহ সব জমি নদীগর্ভে বিলিন হয়েগেছে। শুধু মাত্র বাস্তুভিটাটুকু রয়েছে। সেখানেই পরিবার পরিজন নিয়ে ১১টি পরিবার অতিকষ্টে বসবাস করে আসছি। ভেড়ীবাধ নির্মাণের জন্য সে সময় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সীমানা নির্ধারণ পূর্বক একটি সিডিউল তৈরি করেন। সে অনুযায়ী নির্মাণ কার্যক্রম চলছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তারা ইচ্ছামত উর্দ্ধতন নেতৃত্বের পূর্বের সিডিউল না মেনে আমাদের বাস্তুভিটার উপর দিয়ে ভেড়ীবাধ নির্মাণ শুরু করেন এবং আমাদের গাছপালা শুরু করে এবং বাড়িঘর ভেঙে দেওয়ার প্রস্তুতি নিলে আমার বাধা দেই। সেকারনে দুইদিন বন্ধ থাকলেও ২৭ ফেব্রুয়ারি পুরোপুরিভাবে আমাদের বাড়ি ঘর ভেঙে বাধ নির্মাণের কথা জানিয়ে দিয়েছে তারা। অথচ বাধটি সামান্য ঘুরিয়ে নিলে বা পূর্বের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্মাণ করা হলে আমাদের বসতভিটার কোন ক্ষতিহবে না বা টেকসই ভেড়ীবাধের ও কোন সমস্যা হবে না। এবিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ
এলাকাবাসী অনুরোধ করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ কোন ভ্রুক্ষেপ করছেন না। আমরা অতিশয় দরিদ্র ও গরিব মানুষ। আমাদের সামান্য উপার্জনের উপর পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে আছি। আমাদের অন্য কোথাও মাথাগোজার মত স্থান নেই বা ক্রয় করারও সামর্থ নেই। এখন সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হলে আমাদের রাস্তা উপর বসবাস করতে হবে। তবে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের একটু সুনজর আমাদের ১১টি ঋষি পরিবারকে রক্ষা করতে পারে। তা নাহলে আমাদের পথে পথে ঘুরতে হবে। এব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। সাংবাদিক সম্মেলনে দলিত সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রেসক্লাবের সামনে এব্যাপারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন, কৃষ্ণ মোহন ব্যানার্জী, গোপাল কুমার মন্ডল ও ধীমান সরকার প্রমুখ।