বাণিজ্য মেলার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার

ডেস্ক নিউজ:

রাজধানীর অদূরে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। আজ রোববার সরকারের কাছে সেন্টারটি বুঝিয়ে দেবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চাইনিজ স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে,  ২০ একর জমির ওপর গড়ে তোলা এক্সিবিশন সেন্টারটিতে চলতি বছরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার আয়োজন করার কথা ছিল। তবে করোনাভাইরাসের কারণে মেলাটি হয়তো আপাতত হচ্ছে না। তবে প্রতিবছর এখানেই আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাকে আন্তর্জাতিকভাবে রূপ দিতে ২০১৫ সালে চীনের সহায়তায় ৭৯৬ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয় ইপিবি। ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার কমপ্লেক্স’ (বিসিএফইসি) নামের এ প্রকল্প নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ব্রাহ্মণখালীর বাগরাইয়াটেকের ২০ একর জায়গার ওপর বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৭৯৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এরমধ্যে চীন সরকার ৬২৫ কোটি এবং বাংলাদেশ সরকার ১৭১ কোটি টাকা দিয়েছে।

বাস্তবায়ন চুক্তি অনুযায়ী, চীন সরকারের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘চাইনিজ স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন’ এই এক্সিবিশন সেন্টার কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ করেছে।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চাইনিজ স্টেট কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার কমপ্লেক্স আনুষ্ঠানিকভাবে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর কাছে বুঝিয়ে দেবে। সকাল সাড়ে ১০টায় এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ঢাকার শেরেবাংলা নগরের মেলার অস্থায়ী মাঠ থেকে পূর্বাচলে নির্মিত সেন্টারটির দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। আর রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে পূর্বাচলের এ প্রদর্শনী কেন্দ্রটির দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। প্রদর্শনী কেন্দ্রে দৃষ্টিনন্দন ঢেউ খেলানো ছাদের নিচে দুই লাখ ৬৯ হাজার বর্গফুটের পৃথক প্রদর্শনী হলে আছে ৮০০ স্টলের ব্যবস্থা। স্টলগুলো প্রতিটি ৯ বর্গফুটের। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রদর্শনী স্থলে সম্মেলনকক্ষ, খাবারের জন্য বিশাল কক্ষ ও শিশুদের খেলার জায়গা রয়েছে।

এছাড়া সেন্টারটিতে আন্তর্জাতিক মানের মেলা আয়োজনের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ ডরমেটরি রয়েছে। একসঙ্গে ৫০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যারা বিদেশ থেকে এখানে এসে পণ্য প্রদর্শন করবেন, তাদের জন্য থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এই এক্সিবিশন সেন্টার ২০ একর জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে।

জানা গেছে, বিআরটিসি বাসে ২৫ টাকা ভাড়ায় কুড়িল বিশ্বরোড থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল অংশের কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যাওয়া যায়। এখান থেকে পাঁচ থেকে সাত মিনিট হাঁটলেই পাওয়া যাবে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার কমপ্লেক্স।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে বছরে একবার মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হবে। এছাড়া সারা বছর সেখানে সোর্সিং ও পণ্য প্রদর্শনী হবে। সেজন্য পাঁচ তারকা হোটেল, নতুন প্রদর্শনী কেন্দ্র, ভূগর্ভস্থ পার্কিং ইত্যাদি করা হবে। এসব স্থাপনার জন্য এরই মধ্যে বাড়তি ১৫ একর জমি মিলেছে।

উল্লেখ্য, স্থায়ীভাবে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্র করতে ২০০৯ সালে তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরের ৩৯ একর খালি জায়গা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সেখানে জমি না পেয়ে প্রকল্পটি পূর্বাচল উপশহরে সরিয়ে নেয়া হয়। ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রদর্শনী কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হয়।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)