৭০ বছরের রেকর্ড ভাঙল মোংলা বন্দর
নিউজ ডেস্ক:
বিগত ২০২০ সালের শেষ দিন বৃহস্পতিবার রাতে মোংলা বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজ আগমনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। ওইদিন মোংলা বন্দরের ১০ নম্বর মুরিং বয়ায় পানামা পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি ওয়াংডা’ নোঙ্গরের মধ্যদিয়ে বন্দরের ইতিহাসে পণ্য বোঝাই করে একমাসে ভিড়লো ১১৭টি জাহাজ। যা মোংলা বন্দরের নতুন রেকর্ড।
মোংলা বন্দরের গত ৭০ বছরের মধ্যে কোনো মাসেই এতো বেশি জাহাজ আর এই বন্দরে আসেনি। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফকর উদ্দিন জানান, বিগত বিএনপি জোট সরকারের আমলে মৃতপ্রায় মোংলা বন্দর বর্তমান সরকারের সঠিক দিক নির্দেশনায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মোংলা বন্দর এখন আর অলাভজনক বন্দর নয়। লাভজনক প্রতিষ্ঠান। এখন প্রতি মাসেই জাহাজ আগমনে নতুন-নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি জানান, এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ নভেম্বর মরোক্কোর জর্জস লাসফার বন্দর থেকে সার নিয়ে ‘এমভি ওয়াংডা’ ছেড়ে আসা জাহাজটি বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মোংলা বন্দরের ১০ নম্বর মুরিং বয়ায় নোঙ্গর করে। এর মধ্য দিয়ে শুধু ডিসেম্বর মাসে এই বন্দরে আসলো ১১৭টি জাহাজ। যা মোংলা বন্দরের নতুন রেকর্ড। মোংলা বন্দরের ৭০ বছরের মধ্যে কোনো মাসেই এতোবেশী জাহাজ আর এই বন্দরে আসেনি।
তিনি আরো জানান, পদ্মাসেতু চালুর পর দেশের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দর মোংলার উপর আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের চাপ আরো বাড়বে। রাজধানী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়েও কাছে মোংলা বন্দর। এ কারণে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়তে একের পর এক নতুন-নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর পশুর চ্যানেলসহ আউটার বারে ক্যাপিটাল ড্রেজিংসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশিরা এ বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী হয়েছে এবং জাহাজ আগমনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে বলেও জানান তিনি। এতে করে মোংলা বন্দরের রাজস্ব আদায়েও নতুন-নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে।
মোংলা বন্দরের হারবার বিভাগের দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, বিগত ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমনের সংখ্যা ছিল ৪১৬টি, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ছিল ৪৮২টি, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ছিল ৬২৪টি, ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ছিল ৭৮৪টি এবং ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সে সংখ্যা এসে দাড়ায় ৯১২ টিতে। এভাবে প্রতিবছরই মোংলা বন্দরে ১২০ থেকে ১৫০টি করে জাহাজ আগমনের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি ২০২১ সালে মোংলা বন্দরে জাহাজের আগমনের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ।