পানি খেয়ে বেঁচে থাকা ৩ মাসের সেই এতিম শিশু জিমের পাশে বিবিসি
তরিকুল ইসলাম লাভলু:
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধূলিহর ইউনিয়নে দুধের বদলে ময়দা- মিশ্রী মেশানো পানি খেয়ে বেঁচে থাকা ৩মাস বয়সের এতিম শিশু আবু হুরাইরা জিমের পাশে দাঁড়িয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত শ্রমিক লীগের সভাপতি, আওয়ামী মটর শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও বিবিসি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বিবিসি।
সাতক্ষীরার স্থানীয় পত্রিকায় “দুধের বদলে ময়দা- মিশ্রী মেশানো পানি খায় ৩মাসের এতিম শিশু” শীর্ষক শিরোনামে সংবাদটি গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হয়। সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সাড়া ফেলে। ওই সময় সংযুক্ত আরব আমিরাত শ্রমিকলীগের সভাপতি মাহমুদুল আলম বিবিসি তার ব্যবহৃত অফিসিয়ালি ফেসবুক আইডি থেকে পোষ্ট ও কমেন্ট করে জানান এতিম শিশুটির পাশে থাকবেন তিনি। এরই সূত্রে রবিবার দুপুরে সদর উপজেলার ধূলিহর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (বাবু সানা)’র মাধ্যমে শিশুটির পরিবারের কাছে শিশুটির জন্য ১০ প্যাকেট গুড়া দুধ ও শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছেন তিনি।
এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান (বাবু সানা) বলেন, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের সূত্রে মাহমুদুল আলম বিবিসি আমার সাথে যোগাযোগ করে জানান শিশুটিকে সাহায্য করবেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে তিনি আমার মাধ্যমে শিশু আবু হুরাইরা জিমের জন্য ১০ প্যাকেট দুধ ও শীতবস্ত্র দিয়েছেন। এসময় ধূলিহর ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে মাহমুদুল আলম বিবিসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাবু সানা আরো বলেন, মাহমুদুল আলম বিবিসি একজন উদারমনের মানুষ। তিনি সর্বসময় অসহায় মানুষের পাশে থেকে সাহায্য করেন। মহান আল্লাহ্ তা’য়ালা যেনো তাকে সুস্থ্য রাখেন আমরা সেটাই কামনা করি।
এসময় শিশুটির মামা আব্দুল হাকিম বলেন, সংবাদ প্রকাশের জের বিবিসি ভাই আমার ভাগ্না আবু হুরাইরা জিমের জন্য ১০ প্যাকেট দুধসহ শীতবস্ত্র দিয়েছেন। এছাড়া প্রতি মাসে আমার ভাগ্নার জন্য ১০ প্যাকেট দুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিবেন বলে জানিয়েছেন। এবিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত শ্রমিকলীগের সভাপতি ও বিবিসি ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বিবিসি বলেন, ‘সংবাদটি দেখার সাথে সাথে আমি তাৎক্ষণিক ভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে শিশুটিকে সহযোগীতার কথা জানাই। প্রথম পর্যায়ে শিশুটির জন্য ১০ প্যাকেট দুধ ও শীতবস্ত্র দিয়েছি।
পর্যায়ক্রমে প্রতিমাসে শিশুটিকে আমি আমার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ১০প্যাকেট দুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিবো। এছাড়াও আমি চেষ্টা করবো এতিম তিনমাসের শিশু আবু হুরাইয়া জিমসহ তার সহোদর বড় ভাই রাহাত হোসেনের উজ্জ্বল ভবির্ষত গড়ে দিতে। ‘ এসময় তিনি শিশুটিসহ শিশুটির পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সকলের প্রতি অনুরোধ করেন।
উল্লেখ্য: জন্মের পরই মায়ের দুধ খাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ধূলিহর ইউনিয়নের তিনমাস বয়সী শিশু আবু হুরাইয়া জিমের। শিশু আবু হুরাইরা জিমের জন্মের পরেই মারা যান তার মা রেশমা খাতুন, আর বাবা আলামিন ফিরেও দেখেননি কখনো। সেই থেকে মামী চম্পা বেগমের কাছে আদর যত্নে বড় হতে থাকে শিশু আবু হুরাইরা জিম। ডাক্তারী পরামর্শে প্রথম দুইমাস শিশুটিকে স্বাস্থ্যসম্মত গুড়া দুধ খাওয়ালেও বর্তমানে দারিদ্রতার কারনে শিশুটিকে গুড়া দুধ খাওয়াতেও হিমসিম খাচ্ছে পরিবারটি।
কোনদিন একবেলা গুড়া দুধ, অপরবেলা দুধের বদলে পানিতে ময়দা, আবার কখনই-বা দুধ ময়দা ক্রয়ের অর্থ না থাকাই পুরোদিন পানির সঙ্গে মিশ্রী মিশিয়ে গত একমাস ধরে তিনমাসের এতিম শিশুটিকে এভাবেই বাঁচিয়ে রেখেছেন মামী চম্পা খাতুন।