জার্মানির আকাশে ‘আগুনের গোলা’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
হঠাৎ করেই কয়েক সেকেন্ডের জন্য জার্মানির আকাশে উজ্জ্বল গোলাকার আগুন দেখা গেছে। সাত সেকেন্ড ধরে আকাশে জ্বলতে থাকা এই আগুনের গোলাকে কোনো গ্রহাণুর অংশ বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
জার্মানির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অন্তত ৯০ জন প্রত্যক্ষদর্শী ইউরোপের ফাইয়ারবল নেটওয়ার্ককে এই আগুনের গোলা দেখার তথ্য জানিয়েছেন।
বার্লিনের টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি এবং জার্মান এরোস্পেস সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ফায়ারবল নেটওয়ার্ককে সিগেন শহরের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, এই গোলাটি পাঁচ থেকে সাত সেকেন্ড স্থায়ী ছিল। এরপর সেটি একসময় সবুজ রঙ ধারণ করে ছোট দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
জার্মান এরোস্পেস সেন্টারে বিশেষজ্ঞ ডিটার হাইনলাইন জানিয়েছেন, সম্ভবত একটি গ্রহাণুর অংশবিশেষ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেছিল। মধ্য জার্মানির কাসেল শহরের ওপরে এটির অবস্থান ছিল বলে মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছেন তারা।
টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়ুরগেন ওব্যার্স্ট জানিয়েছেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জার্মানির নানা প্রান্ত থেকে আকাশে আগুনের গোলা দেখার খবর আসতে থাকে।
আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম রাইনিশে পোস্ট এক গাড়িচালকের ড্যাশবোর্ডের ক্যামেরায় ধারণ হওয়া আগুনের গোলার ছুটে যাওয়ার দৃশ্য প্রকাশ করেছে।
গাড়িচালক রাইনিশে পোস্টকে বলেছেন, স্থানীয় সময় রাত ৬:৪০ এর দিকে ড্যুসেলডর্ফ-লুন্ডেনব্যার্গের দিক থেকে আসা প্রচণ্ড উজ্জ্বল এই আগুনের গোলা মেটমানের দিকে ছুটে যায় এবং একসময় অনেকগুলো টুকরো হয়ে যায়।
উত্তর জার্মানির শ্লেসভিগ-হোলস্টাইন রাজ্য থেকে এক প্রত্যক্ষদর্শী অস্ট্রিয়ার গাহব্যার্গ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রকে সবুজ লেজওয়ালা এক উজ্জ্বল বস্তুকে পশ্চিম থেকে পূর্বের দিকে ছুটে যেতে দেখার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আগুনের গোলার চেয়ে তার লেজ ছিল ৩-৪ গুণ বড় এবং সেটা থেকে ছোট ছোট জিনিস ছড়িয়ে পড়ছিল।
উল্কাপাত এবং আগুনের গোলার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রয়েছে৷ পাঁচ সেকেন্ডের কম সময় ধরে জ্বলা বস্তুকে উল্কা বলা হলেও এর বেশি সময় ধরে আকাশে জ্বলতে থাকা বস্তুকে ফায়ারবল বা আগুনের গোলা বলা হয়ে থাকে। এই ফায়ারবল সাধারণত উল্কার চেয়ে অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়।
ফায়ারবল নেটওয়ার্কের তথ্যমতে ইউরোপের আকাশে প্রতি বছর অন্তত ৩০টি ফায়ারবলের দেখা মেলে৷ নভেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসেই এই ধরনের বস্তু বেশি দেখা যায়। ১৯ নভেম্বর একই ধরনের বস্তু অস্ট্রিয়ার আকাশে দেখা গেছে বলেও জানান হাইনলাইন৷
সূত্র: ডয়চে ভেলে