আশাশুনি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বাকী বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  :

আশাশুনি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বাকী বিল্লাহ’র বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে অভিযোগের তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৫ সেপ্টেম্বর- ২০ তারিখে উপজেলার ভুক্তভোগী শিক্ষকগনের পক্ষে (বে-নামে) অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তদন্ত করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা। সরজমিনে তদন্ত করে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন ও বদলীর আবেদন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করা হয়। এছাড়া, দুদক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে এর অনুলিপি প্রদান করা হয়। তদন্তকালে শিক্ষা কর্মকর্তা বাকী বিল্লাহসহ বদরতলা, মহিষাডাঙ্গা, আনুলিয়া, চাপড়া, কোদণ্ডাসহ ১২জন প্রধান শিক্ষক ও দুজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগে প্রকাশ- আশাশুনি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বাকী বিল্লাহ ২০১৬ সালে পার্বত্য এলাকা থেকে বদলী হয়ে আশাশুনিতে যোগদানের পর ঘুষ, দুর্নীতি, নিয়োগ ও এমপিও বাণিজ্য, হয়রানি এবং আর্থিক অনিয়ম করে চলেছেন। শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ হলেই তাকে বিরাট অংকের ঘুষ নগদে প্রদান করতে হয়। তার অধীনে বিছট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ৮৫ হাজার টাকা, মহিষাডাঙ্গা মা. বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ৯০ হাজার টাকা, গোয়ালডাঙ্গা মা. বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ১ লক্ষ টাকা, কোদণ্ডা মা. বিদ্যালয়ে মা. বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ১ লক্ষ টাকা, দীঘলারআইট মা. বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ১ লক্ষ টাকা, পিএনএফ ধনিরাম মা. বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দেড় লক্ষ টাকা, বদরতলা মা. বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা, বুধহাটা কলেজিয়েট স্কুলে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ৫০ হাজার টাকা, চাকলা দাখিল মাদ্রাসার দুই কর্মচারী নিয়োগে দেড় লক্ষ টাকা ও চিলেডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার ১ কর্মচারী নিয়োগে ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে তিনি শিক্ষা অফিসকে ঘুষ বাণিজ্যের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। যেকোন শিক্ষক-কর্মচারী নতুন এমপিও করতে গেলে ৮-১০ হাজার টাকা দিতে হয়। এছাড়া উচ্চতর স্কেল, বিএড স্কেল, স্তর পরিবর্তনে গুনাকরকাটি মা. বিদ্যালয়ের দুজনের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা,আল আমিন মহিলা আলিম মাদ্রাসার ৪ জনের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা, ২০১৮ সালে ১১ জন আইসিটি শিক্ষকের এমপিও করতে তাদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়। ২০১৯-২০ সালে বিজয় ফুল উৎসবে সরকার কতর্ৃক ২ হাজার করে বরাদ্দ দিলেও ৪/৫ টি স্কুলকে দিয়ে তিনি ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, সরকারি বই বিতরণে বিগত ৪ বছরে মিথ্যা ভাউচার বানিয়ে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া স্কুল-মাদ্রাসার এসএমসি গঠনে কমপক্ষে ১০/১৫ হাজার টাকা সন্মানীভাতা নিয়ে থাকেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি সপ্তাহে এক দুই দিন অর্ধবেলা অফিস করেন। অফিসে বসে সিগারেট ফুঁকে তিনি পরিবেশ নষ্ট করেন। উপজেলা ক্যাম্পাসে না থেকে সাতক্ষীরায় স্বপরিবারে বাসা ভাড়া করে থাকেন। তার সাতক্ষীরা বাসা থেকে সরকারি মটরসাইকেল (১৫০ সিসি এ্যাপাসি) চুরি হলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগকারী প্রত্যেকটি অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে দুইজন সাংবাদিক ও ১৩ জন শিক্ষকের মোবাইল নং দিয়ে গোপনীয়তা রক্ষা করে তদন্ত সম্পন্ন করার অনুরোধ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা জানান, অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রথম দিনের তদন্ত শেষ হয়েছে। স্বাক্ষীদের লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)