শীতে যে কারণে খেজুর খাবেন
চিকিৎসা ডেস্ক :
শীতের সময়টাতে বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে সবাই একটু বেশি রোগে আক্রান্ত হন। সাধারণ ফ্লু থেকে শুরু করে আরো অনেক সমস্যা। যারা আগে থেকেই অন্যান্য সমস্যায় ভুগছেন তাদের সমস্যা আরো বেড়ে যায় শীতের সময়টাতে। আর এসব কারণেই নিজেকে এই সময়টাতে চাঙ্গা রাখা মুশকিলই বটে।
এই কারণেই পুরো শীতকালজুড়ে সঙ্গী করুন খেজুরকে। এই সময় নিয়মিত খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। খেজুরে উপস্থিত ফাইবার, উপকারী তেল, ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, কপার, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন কে এবং আরো নানাবিধ খনিজ উপাদান, বিভিন্নভাবে শরীরের উপকার করে।
বিশেষ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তুলতে এই উপদানগুলোর জুড়ি নেই। তাই ছোট বড় সবাইকেই শীতের সময়টাতে খেজুর খেতে হবে।
চলুন জেনে নেয়া যাক এর আরো কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা-
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে
একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, খেজুরে উপস্থিত ডায়াটারি ফাইবার, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও নানাবিধ উপকারী উপাদান শরীরে প্রবেশ করার পর ব্রেন সেলের ক্ষমতাকে এতটাই বাড়িয়ে তোলে যে ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো। তাই প্রতিদিন ২-৩ টি করে খেজুর খান।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
খেজুরে উপস্থিত ভিটামিন সি এবং ডি শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে ত্বক টানাটান হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে বলিরেখাও দূর করতে সহায়তা করে। ফলে ত্বক প্রাণবন্ত এবং উজ্জ্বল হয়ে উঠতে সময় লাগে না। এই ফলটিতে উপস্থিত অ্যান্টি-এজিং প্রপাটিজ, ত্বকের বয়স ধরে রাখতেও নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
হার্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ডায়াটারি ফাইবারে সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে নিয়মিত খেজুর খেলে শরীরে “এল ডি এল” বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করে। ফলে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের আশঙ্কা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত পটাশিয়াম আরো সব হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও কমায়।
পেটের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয়
প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে নিয়মিত এই ফলটি খেলে বাওয়েল মুভমেন্টে মারাত্মক উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনো ধরনের পেটের রোগই আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৩ টি করে খেজুর খেলে শরীরের ভেতরে উপকারই ব্যাকটেরিয়ায় মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে বদ-হজম, কোলাইটিস এবং হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে প্রতিদিন তিনটি করে খেজুর খেলে শরীরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যে তার প্রভাবে ক্যান্সার সেলের জন্মে নেয়ার আশঙ্কা যায় কমে। ফলে ক্যান্সারের মতো মারণ রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। বিশেষ করে কোলোরেক্টাল ক্যান্সার মতো রোগ দূরে থাকতে বাধ্য হয়।
শরীরে শক্তি যোগায়
প্রতিদিন যদি আপনি খেজুর খান তাহলে আপনার শরীরে এনার্জির ঘাটতি হবে না কখনোই। এটি বলা যায় এনার্জি ফ্যাক্টরি। এতে থাকা প্রকৃতিক সুগার রক্তে মেশার পর এমন মাত্রায় খেল দেখাতে শুরু করে যে শরীর একেবারে চনমনে হয়ে ওঠে, সেই সঙ্গে মানসিক ক্লান্তি দূর করতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এবার থেকে যখনই ক্লান্ত লাগবে দুই তিনটা খেজুর খেয়ে নিন।
দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে খেজুর খাওয়ার পাশাপাশি যদি নিয়মিত এই ফলটির পাতা খাওয়া যায়, তাহলে শরীরের ভেতরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যে দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটে চোকে পরার মতো! সেই সঙ্গে রাতকানা রোগ সহ চোখের অন্যান্য রোগের প্রকোপও কমতে থাকে।
ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত খেজুর খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যার প্রভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসতে সময় লাগে না।