এবার অতীতের সব রেকর্ড ভাঙবে ইলিশের উৎপাদন
নিউজ ডেস্ক:
পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদীতে ২২ দিন ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। আর এ ২২ দিনে ৫১ দশমিক দুই শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে, যা গত বছরের তুলনায় দেড় থেকে দুই শতাংশ বেশি। ফলে এ মৌসুমে প্রায় ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি নতুন ইলিশ যুক্ত হতে পারে।
আগামী মার্চ-এপ্রিলে জাটকা সংরক্ষণ করা সম্ভব হলে ইলিশের উৎপাদন হতে পারে ছয় লাখ টনের বেশি, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২৫ হাজার কোটি টাকা। ইলিশ উৎপাদনে এবার অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করবে বলে আশাবাদী ইলিশ গবেষকরা।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে তিনটি গবেষক দল ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন নদ-নদী ও ইলিশের অভয়াশ্রমে গবেষণা চালায়। যৌথভাবে কাজ করে তারা এ ফলাফল পেয়েছেন।
ইলিশ গবেষক ড. আনিসুর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের অভিযান সফল হওয়ায় এবার নদীতে রেকর্ড পরিমাণে ডিম ছেড়েছে মা ইলিশ। কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরো বাড়বে।
তিনি বলেন, আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমা ও অমাবস্যাকে কেন্দ্র করে নদীতে ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। প্রজনন মৌসুমে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে গত ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশ ধরা এবং বাজারজাতে নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। কোস্টগার্ড ও পুলিশের সহায়তায় মাছের অভয়াশ্রম নিশ্চিতে কাজ করে মৎস্য বিভাগ প্রশাসন।
ড. আনিস বলেন, বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে মা ইলিশের ডিম ছাড়ার পরিমাণ বাড়ছে। ২০১৬ সালে ৪৩ দশমিক ৪৫, ২০১৭ সালে ৪৬ দশমিক ৪৭, ২০১৮ সালে ৪৭ দশমিক ৭৫ ও ২০১৯ সালে ৪৮ দশমিক ৯২ শতাংশ ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। এ বছর রেকর্ড ৫১ দশমিক দুই শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, জেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ড, পুলিশের সঙ্গে এবার মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে বিমানবাহিনী ও র্যাব নদীতে অভিযান চালিয়েছে। অভিযানে ৩১১ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ২৪৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়। এছাড়া সাত কোটি চার লাখ ৪৬ হাজার মিটার কারেন্ট জাল, পাঁচ হাজার ১৯২ কেজি ইলিশ উদ্ধার করা হয়েছে।