দেবহাটার শীর্ষ আ.লীগ নেতাদের নামে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন
দেবহাটা প্রতিনিধি:
আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করতে নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী ও দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মুজিবর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফারুক হোসেন রতনের নামে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা অপপ্রচার ও অপরাজনীতির প্রতিবাদে দেবহাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১টায় দেবহাটা প্রেসক্লাবের হলরুমে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গ সহযোগী সংগনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সখিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ফারুক হোসেন রতন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় আমরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল কর্মকান্ড বাস্তবায়ণ করে সংগঠনকে সুসংগঠিত করে রেখেছি। আমাদের এই দক্ষ নেতৃত্বে যখন উপজেলা আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত ও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে, ঠিক তখনই আসন্ন আসন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপ-নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্ত করতে এবং দলের মধ্যে অভ্যন্তরীন কোন্দল সৃষ্টি করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে দলের বহিরাগত ও বিতর্কিত কিছু ব্যাক্তি। যারা কখনোও আওয়ামী লীগের ভালো চায়নি। বরারবই তারা ছিলেন নৌকার বিরোধী। তারা সবসময় উপজেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলো। ষড়যন্ত্রকারী বিতকিংত এসব ব্যাক্তিদের মধ্যে মুল নেতৃত্ব দিচ্ছে দেবহাটার চিহ্নিত দালাল রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদ আবু রায়হান হত্যা মামলার আসামীদের সাথে আপোষ করে তাদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া পারুলিয়ার বহুল বিতর্কিত গাজী শহীদুল্যাহ, উপজেলার চিহ্নিত মাদকসেবী ও দালাল রাশেদুল ইসলাম এবং আমাকে (শেখ ফারুক হোসেন রতন) হত্যাচেষ্টা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামী আব্দুল আজিজ।
আজ এসব বিতর্কিত ব্যাক্তিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রানপুরুষ ও দুঃসময়ের কান্ডারী পরপর দুই বাবের নির্বাচিত সভাপতি আলহাজ্ব মুজিবর রহমান, টানা তিনবারের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা মনিরুজ্জামান মনি এবং আমাকে নৌকার বিরোধীতাকারী হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে। কিন্তু তার আগে সকলের জানা প্রয়োজন যে ওই রফিকুল ইসলাম, শহীদুল্যাহ গাজী, রাশেদুল ইসলাম ও আব্দুল আজিজ কে? তারা উপজেলা আওয়ামী লীগের কেউ নয়। বিগত দিনে পারুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তারা প্রত্যক্ষভাবে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী গোলাম ফারুক বাবুর পক্ষে কাজ করেছিলো। পরপর দুবারের জাতীয় নির্বাচনে তারা আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সাতক্ষীরা-০৩ আসনের সাংসদ আলহাজ্ব অধ্যাপক ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এমপির নৌকা প্রতিকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি সমর্থিত ডা. শহীদুল আলম ও ইউসুফ আব্দুল্যাহর পক্ষে সরাসরি নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিয়েছিলো।
তাদেরকে কুলাঙ্গার আখ্যা দিয়ে শেখ ফারুক হোসেন রতন আরো বলেন, সীমান্তের অবৈধ ঘাট, খাটাল, চোরাচালানসহ এমন কোনো অবৈধ খাত নেই যেখানে দালালি করেননা পারুলিয়ার রফিকুল ইসলাম। এসব খাতে দালালি করে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা পকেটস্থ করছেন ওই রফিকুল। তারপরই রয়েছে গাজী শহীদুল্যাহ। ইতোপূর্বে সুন্দরবনের একাধিক বনদস্যু বাহিনীর সাথে সংশ্লিষ্টতা ছিল গাজী শহীদুল্যাহর। তিনিই সুন্দরবনের এসব বাহিনীকে নিয়ন্ত্রন এবং তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র সরবরাহ করতেন। এছাড়া ২০১৩ সালে সহিংতাকালীন সময়ে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হানকে জামায়ত-শিবির ক্যাডার কতৃক নৃশংসভাবে হত্যার পর সেই সব হত্যাকারী ও মামলার আসামীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদায় করে রাতারাতি অর্থ সম্পদের মালিক বনে যান শহীদুল্যাহ গাজী। তাদের সাথে রয়েছেন বহুল বিতর্কিত দালাল ও চিহ্নিত মাদকসেবী রাশেদুল ইসলাম। তিনবেলা নিয়ম করে ফেন্সিডিল ও গাঁজা সেবন ওই রাশেদুলের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন কাজ। মাদকের টাকা যোগাড় করতে সকাল থেকে শুরু করে রাত অবদি বিপদে পড়া মানুষদের উপকার করার নামে টুপি পরিয়ে কৌশলে মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করে রাশেদুল। ইতোপূর্বে তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ওই রাশেদুলের বিরুদ্ধে ঝাঁটা মিছিলও করে এলাকার সাধারণ মানুষ। আর চলমান এই ষড়যন্ত্রে তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে আমাকে (শেখ ফারুক হোসেন রতন) গুলি করে হত্যাচেষ্টা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামী ও ভুমিদস্যু সখিপুরের আব্দুল আজিজ। যাকে ২০১৮ সালে রেজুলেশনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিলো।
বর্তমানে এসকল বিতর্কিত ব্যাক্তিরা আবারো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও উপ-নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্থের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নিজেদের স্বার্থে আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের এই নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে। অবিলম্বে তদন্ত করে এসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়ে রতন বলেন, যারা দলকে ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার উপযুক্ত সময় এখনই। তিনি আরো বলেন, আমরা বিগত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছিলাম এবং বর্তমানেও করছি। কিন্তু বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে গত ৯ নভেম্বর মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরে পারুলিয়ার গাজী শহীদুল্যাহ সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রচেষ্টা চালায়। এমনকি উপ নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাশী আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কেও ওই সংবাদ সম্মেলনে বিভ্রান্তিকর তথ্য তুলে ধরে গাজী শহীদুল্যাহ। এঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে আমরা চাই দীর্ঘদিনের উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই কান্ডারীর মধ্য থেকে রাজনৈতিক দক্ষতার ভিত্তিতে যেকোন একজনকে নৌকার মনোনয়ন দিয়ে দেবহাটার উন্নয়নকে আরো এগিয়ে নেওয়ার আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবী জানান নেতৃবৃন্দরা।
সংবাদ সম্মেলনে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।